লুহানস্ক ও দোনেস্কসহ পূর্ব ও দক্ষিণ ইউক্রেনের চারটি রুশ-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের কর্মকর্তারা বলেছেন যে তারা রাশিয়ার অংশ হওয়ার বিষয়ে গণভোট আয়োজন করছেন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী ২৩ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে বলে।
ইউক্রেন যুদ্ধক্ষেত্রে পরাজয়ের পর এমন উদ্যোগকে দখল পুনরুদ্ধার করার জন্য রাশিয়ার একটি কৌশল হিসাবে এই পরিকল্পনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা টুইট করেছেন, ‘ভুয়া ‘গণভোট’ কিছুই পরিবর্তন করবে না।
কর্মকর্তা ও সংবাদ সংস্থার মতে, দনবাস অঞ্চলের স্ব-ঘোষিত ডোনেটস্ক এবং লুহানস্ক প্রজাতন্ত্রে ভোট হবে, যেটিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর কিছুক্ষণ আগে স্বাধীন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন।
এছাড়াও ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের প্রথম দিকে রুশ সৈন্যদের দখলকৃত দক্ষিণ খেরসন অঞ্চল এবং আংশিকভাবে রুশ নিয়ন্ত্রিত জাপোরিজিয়া অঞ্চলেও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। তবে রাশিয়া চারটি অঞ্চলের কোনোটিই পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করে না, মাত্র ৬০ শতাংশ ডোনেস্ক অঞ্চল রাশিয়ার হাতে।
গণভোট সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, অপারেশনের শুরু থেকেই আমরা বলেছিলাম যে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের জনগণ তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করবে এবং বর্তমান পরিস্থিতি নিশ্চিত করে যে তারা তাদের ভাগ্যের মালিক হতে চায়।
সম্প্রতি লুহানস্ক অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট লিওনিদ পাস্কনিক এমন একটি আইনে সই করেন যার ফলে রুশ ফেডারেশনে যুক্ত হওয়ার জন্য তার প্রজাতন্ত্রে গণভোটের আয়োজন করতে বলা হয়।
এরপর দোনেস্ক অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট ডেনিস পোশিলিনও একই রকম আইনে স্বাক্ষর করেন। তিনি একইসঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আনুষ্ঠানিক চিঠি লিখে জানান, দোনেস্ক অঞ্চলের জনগণ যদি রুশ ফেডারেশনে যুক্ত হওয়ার পক্ষে রায় দেয় তাহলে পুতিন যেন এই অঞ্চলকে রুশ ফেডারেশনে অন্তর্ভুক্ত করে নেন।
এর আগে ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপের জনগণ এক গণভোটে রুশ ফেডারেশনে যুক্ত হওয়ার পক্ষে ভোট দেয়। ওই ভোটাভুটির জের ধরে ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে যুক্ত করে নেন প্রেসিডেন্ট পুতিন।
এদিকে জাতিসংঘে সংস্থার বার্ষিক সম্মেলনে জড়ো হওয়া, ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররা রাশিয়ার সর্বশেষ পরিকল্পনার নিন্দা করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গণভোটগুলিকে একটি “প্রতারণা” বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এছাড়াও কানাডা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নও পরিকল্পিত ভোটের নিন্দা করেছে। ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন যেসব অঞ্চলে যুদ্ধ প্রত্যক্ষ করা হচ্ছে, যেখানে বোমা হামলা হচ্ছে, সেখানে যেকোনও ভোট আয়োজন আইনত অর্থহীন হবে।
সূত্র: আল জাজিরা