সারাদেশের মতো রাত ৮টার পর সিলেটের দোকানপাট ও শপিং মল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এমনকি নির্দেশনা অমান্যকারীদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
ইতোমধ্যে সিলেট বিভাগের প্রত্যেক জেলা প্রশাসককে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দিয়েছে বিভাগীয় প্রশাসন।
সিলেটের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) দেবজিৎ সিংহ বলেন, ‘আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে নির্দেশনা পেয়েছি- বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে রাত ৮টার পরপরই দোকানপাট, মার্কেট ও শপিং মল ব্ন্ধ করে ফেলতে হবে। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তারা ব্যবসায়িবৃন্দকে বিষয়টি অবগত করবেন এবং এ বিষয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাবেন। পরবর্তীতে কেউ এ আদেশ না মানলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। যারা সরকারের নির্দেশনা অমান্য করবেন তাদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।’
এ ব্যাপারে সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান জানান, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমরা ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে কথা বলেছি। তারা একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সিলেটে কোনো দোকানপাট রাত ৮টার পর খোলা থাকবে না বলে জানিয়েছেন তারা। আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত রাখব। কোনো দোকানপাট খোলা থাকলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এদিকে প্রথমদিন নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জিন্দাবাজারের মিলিনিয়াম, এলিগ্যান্ট, ব্লু-ওয়াটার, ওয়েস্ট ওয়ার্ল্ড, সিটি সেন্টারসহ বিভিন্ন মার্কেট রাত ৮টার পর থেকে বন্ধ রয়েছে।
এর আগে সোমবার (১৮ জুলাই) কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক তপন বিকাশ তঞ্জঙ্গ্যা স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে সিলেটসহ সারাদেশে রাত ৮টার পর দোকান, শপিংমল, মার্কেট, বিপণী বিতান ইত্যাদি বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়।
এতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী জ্বালানির অব্যাহত মূল্য বৃদ্ধিজনিত বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের নিমিত্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ১১৪ ধারার বিধান অনুযায়ী রাত ৮ টার পর দোকান, শপিংমল, মার্কেট এবং বিপণী বিতান বন্ধ রাখতে হবে। এ আইন বাস্তবায়নে কঠোরভাবে প্রতিপালনপূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়।
সরকারের এ সিদ্ধান্তের কথা সিলেটের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ী নেতা, মার্কেট পরিচালনা কমিটি, মালিক সমিতি, মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতিসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে জানানো হয়েছে।
এমতাবস্থায় দোকান, শপিংমল, মার্কেট এবং বিপণী বিতানের মালিক এবং বিভিন্ন ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা প্রতিপালনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সাশ্রয়ে সহযোগিতার অনুরোধ করা হয় ওই প্রজ্ঞাপনে।
এদিকে- রাত ৮টার পর দোকানপাট, শপিংমল খোলা থাকলে তাদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
বিদ্যুৎ সাশ্রয় ইস্যুতে সোমবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘রাত ৮টা থেকে সব ধরনের দোকানপাট, শপিংমল, আলোকসজ্জা বন্ধ থাকবে। বিদ্যুৎ বিভাগকে বলা হয়েছে, তারা খুব কঠিনভাবে এ বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবে। যদি কেউ অমান্য করে তাদের বিদ্যুতের লাইন আমরা বিচ্ছিন্ন করে দেব।’