অভ্যন্তরীণ গোলযোগে মিয়ানমার থেকে মর্টারশেল এসে বাংলাদেশের সীমানায় পড়ে হতাহতের ঘটনায় উদ্বিগ্ন ঢাকা। কয়েক দফায় দেশটির রাষ্ট্রদূতকে তলব করে তাদের সেনাবাহিনীকে সংযত ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। এবার মিয়ানমারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের কাছে এ বিষয়ে ‘ব্যাখ্যা’ দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক জ ফিও উইন। যদিও তিনি এ ঘটনার পুরো দায় আরাকান আর্মি ও আরসার ওপর চাপানোর চেষ্টা করেছেন।
মিয়ানমার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়, সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম চৌধুরীর সঙ্গে ওই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক জ ফিও উইনের বৈঠক হয়।
বৈঠকে মহাপরিচালক সীমান্ত পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছেন বলেও পোস্টে উল্লেখ করা হয়। পোস্টের তথ্য অনুযায়ী, তিনি এ ঘটনায় আরাকান আর্মি ও আরসার ওপর পুরো দায় চাপিয়ে দাবি করেন, ইচ্ছাকৃতভাবে ওই সংগঠন দুটি এসব কাজ (বাংলাদেশে বোমা, গুলি ও মর্টারশেল নিক্ষেপ) করছে, যাতে করে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সম্পর্ক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ আগস্ট বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকার জনবসতিতে দুটি মর্টারশেল এসে পড়ে। এতে কেউ হতাহত না হলেও সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। এর মধ্যে দুটি যুদ্ধ বিমান ও দুটি ফাইটিং হেলিকপ্টার থেকেও গোলা নিক্ষেপ করে দেশটি।
এসব ঘটনায় ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে একাধিকবার তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর বিকালে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে আহত হন উইনু থোয়াইং তঞ্চঙ্গ্যা (২২) নামে এক তরুণ। এরপর রাত ৮টার দিকে মিয়ানমার থেকে ছোড়া একটি মর্টারশেল এসে পড়ে সীমান্তের নো-ম্যান্স ল্যান্ডে। নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড কোনারপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সেটির বিস্ফোরণে সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত মো. ইকবাল (১৭) নামে এক রোহিঙ্গা নিহত হন। এতে আহত হন আরও পাঁচ জন।