গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের প্রতিবাদে ইসরায়েলিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে মালদ্বীপ। মুসলিমপ্রধান এই দেশ বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার রাতে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট কার্যালয় থেকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর কার্যালয়ের এক মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু ইসরায়েলি পাসপোর্টের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’ তবে কবে নাগাদ এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বা কবে শেষ হবে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি ওই মুখপাত্র। উল্লেখ্য, মালদ্বীপের বিরোধী দল ও সরকারি দলের মিত্ররা গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদের নিদর্শন হিসেবে ইসরায়েলিদের নিষিদ্ধ করার জন্য মুইজ্জুকে চাপ দিয়ে আসছে।
মালের এই ঘোষণার পরপরই এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রোববার এক সুপারিশে বলেছে, যেন ইসরায়েলি নাগরিকেরা মালদ্বীপে ভ্রমণ না করেন। ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, এমনকি যাঁরা ইসরায়েলসহ অন্য একটি দেশের দ্বৈত নাগরিকত্ব ধারণ করেন, তাঁরাও যেন মালদ্বীপে না যান।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ইসরায়েলি নাগরিকদের এরই মধ্যে দেশটি (মালদ্বীপ) ছেড়ে যাওয়ার কথা বিবেচনা করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কারণ তারা যদি কোনো কারণে সমস্যায় পড়ে, তবে আমাদের পক্ষে সহায়তা করা কঠিন হবে।’
রোববার মালদ্বীপের কার্যালয় বলেছে, মন্ত্রিসভা ইসরায়েলি পাসপোর্টধারীদের দেশে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়ার জন্য আইন পরিবর্তন করার এবং প্রক্রিয়াটি তদারক করার জন্য একটি উপকমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ছাড়া, মুইজ্জু ‘ফিলিস্তিনের সঙ্গে সংহতিতে মালদ্বীপবাসী’ নামে একটি জাতীয় তহবিল সংগ্রহের প্রচারণাও ঘোষণা করেছেন।
মালদ্বীপ ১৯৯০-এর দশকের শুরুর দিকে ইসরায়েলি পর্যটকদের ওপর থেকে আগের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিল এবং ২০১০ দুই দেশ সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু ২০১২ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ ক্ষমতাচ্যুত করার পর সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
উল্লেখ্য, মালদ্বীপের সরকারি তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের প্রথম চার মাসে মালদ্বীপে বেড়াতে যাওয়া ইসরায়েলিদের সংখ্যা ৫২৮, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮৮ শতাংশ কম। ২০২৩ সালে প্রায় ১১ হাজার ইসরায়েলি মালদ্বীপে গিয়েছিলেন।