তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসনে দলটির প্রার্থী শমসের মবিন চৌধুরী বলেছেন, অনেকেই বলেন আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাত করে নির্বাচনে এসেছে তৃণমূল বিএনপি। এটা ঠিক নয়। তৃণমূল বিএনপি নতুন রাজনৈতিক দল। এবারের নির্বাচন আমাদের যাত্রা শুরু মাত্র। জন্মলগ্ন থেকেই তৃণমূল বিএনপি এককভাবে নির্বাচন করতে চেয়েছে। এটার বাস্তবায়নও হয়েছে।
তিনি বলেন, কারোর সাথে কোনোরকম রফাদফা করে তৃণমূল বিএনপি নির্বাচনে যায়নি। তৃণমূল বিএনপি কারোর সাথে জোটবদ্ধ নির্বাচনের কথা বলেনি। নিজের জোরে নিজের চেষ্টাতেই নির্বাচনে এসেছে। কারো মার্কা ধার করে আসেনি। নিজেদের মার্কা (সোনালী আঁশ) নিয়ে নির্বাচনে এসেছে। অন্যের মুকুট নয়; তৃণমূল বিএনপি বিজয়ী হলে নিজের মুকুটই মাথায় পরতে চায়।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সিলেটে সংবাদ সম্মেলনে তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী শমসের মবিন চৌধুরী একথা বলেন।
বেলা ১টায় সিলেট নগরীর আম্বরখানা ইলেকট্রিক সাপ্লাইরোডস্থ একটি অভিজাত হোটেলের কনফারেন্সরুমে তৃণমূল বিএনপি সিলেট জেলা কমিটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিলেট-২ আসনের আব্দুর রব মল্লিক, সিলেট-৪ আসনের মো. আবুল হোসেন ও সিলেট-৫ আসনের কুতুব উদ্দিন আহমদ শিকদার।
বীর বিক্রম শমসের মবিন চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মানুষ চায় নিরপেক্ষ রাজনৈতিক শক্তির উত্থান; যারা তৃণমূলের মানুষের কথা বলবে। তৃণমূলের সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করবে। আমাদের দল গণমানুষের আশা-ভরসা পূরণের লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। সেই লক্ষ্যেই তৃণমূল বিএনপি ৩০০টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিলো। সর্বশেষ ১৪২ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। সকল প্রার্থীই প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে আসা তৃণমূল পর্যায়ের প্রতিনিধি।
সরকারের সাবেক এই পররাষ্ট্রসচিব বলেন, দলের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করার পর প্রধানমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেছি। জানিয়েছি নির্বাচনে যাবো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্বস্ত করেছিলেন নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। আমরাও দেখছি এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন নিরপেক্ষ ভূমিকাতেই আছে। আমরা আশাবাদি সুন্দর নির্বাচন হবে।
তিনি বলেন, বিগত নির্বাচনগুলোর মতো পরিবেশ এবার মনে হয় হবে না। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাতের বেলা ভোট হয়েছে বলে জনগণ বলেন। তার আগে ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিপুলসংখ্যক প্রার্থী বিনা চ্যালেঞ্জেই এমপি হয়েছেন। এবার অন্তত সেটা হচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনে সমশের মবিন চৌধুরী তার দলের নির্বাচনী ইশতেহার থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উত্থাপন করে বলেন, যদি তার দল সংসদে যাওয়ার সুযোগ পায়, তবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধ বাস্তবায়নে কাজ করবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের একদল দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষ সিঙ্গাপুর, আমেরিকা, ইংল্যান্ড, কানাডা, দুবাই, মালয়েশিয়ায় বাড়ি বানাচ্ছেন। সম্পদ পাচার করছেন। কিন্তু দেশের কৃষকশ্রেণীর, তৃণমূল জনগণের কোনো উপকার হচ্ছে না। আমরা সুযোগ পেলে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তৃণমূলের উন্নয়নে কাজ করবো।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দেশে বেশ কিছু মৌলিক সংস্কারের প্রয়োজন এসেছে। দেশের জন্মলগ্নে ৭ কোটি মানুষের জন্য ছিল ৩০০টি সংসদীয় আসন। বায়ান্ন বছর পেরিয়ে গিয়েও একই জায়গাতেই রয়ে গেছে আসন সংখ্যা। আমরা দাবি জানাবো দেশের প্রতিটি উপজেলার বিপরীতে একটি সংসদীয় আসন যেন রাখা হয়। সেটা না হলে অন্তত সাড়ে ৪৫০টি আসন যেনো করা হয় সংসদে। পাশাপাশি আমরা দাবি জানাবো অন্যান্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ন্যায় এখানেও যেনো দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ চালু করা হয়। তাছাড়া প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা বাস্তবায়নের দাবি থাকবে তৃণমূল বিএনপির। দেশীয় স্বার্থ রক্ষা করে পররাষ্ট্রনীতি তৈরির দাবি জানাবো আমরা।