মাধবপুরের আনন্দগ্রাম স্কুলে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার আনন্দগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। ভবনের পিলারগুলো অর্ধেক ভেঙ্গে কোন রকমে ঠিকে আছে। ভবনের ছাঁদ ফেটে গেছে। পলেস্তারা উঠে গেছে বহু আগেই। নেই ওয়াশ ব্লক। প্রাক প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা একটি রুম করা হলেও সে খুব ছোট।

এই ভবনেই ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। আধা পাকা, উপরে টিন দিয়ে নতুন একটি ঘর করা হলেও সেটা পর্যাপ্ত নয়।এই বিদ্যালয়ের নতুন একটি ভবন করা হোক; দাবি স্থানীয় বাসিন্দা, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের।

জানা গেছে, ৩৩ শতক জমি নিয়ে ১৯৮৯ সালে স্থাপিত হয় আনন্দগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বি-গ্রেডের এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ শ ৯৩ জন। বিদ্যালয়ে শিক্ষক রয়েছেন ৫ জন।

বিদ্যালয়ের সাবেক এক শিক্ষার্থী জানান, বিদ্যালয়ের ভবনটির অনেক বছর হয়ে গেছে। ভাঙ্গা ধরে গেছে, জং পড়ে গেছে। ছাত্র-ছাত্রী ক্লাসরুমে বসলে ছাঁদের পলেস্তারা খসে পড়ে শিক্ষার্থীদের মাথায়।

সাবেক ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘স্থানীয় তিনগাঁও, বিষ্ণুপুর, শ্রীপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের শিক্ষার্থীরা এই বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। অন্য বিদ্যালয়ে সুন্দর ভবন রয়েছে। আমাদের স্কুলে একটি সুন্দর ভবন হলে বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বাড়বে এবং শিক্ষার্থীদের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস করতে হবে না।’

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইখতিয়ার উদ্দিন জানান, ‘বিদ্যালয়ে একটি মানসম্মত বাথরুম নেই। বিদ্যালয়ে বেঞ্চ কম, বাচ্চাদের বসার জায়গাও কম। তাই আমাদের খুব কষ্ট হচ্ছে।’

বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য আব্দুল জলিল জানান, আগে বিল্ডিং ছিল এটির ছাঁদসহ নষ্ট হয়ে গেছে। একটি টিনশেড ঘর করা হয়েছে এটাতে পর্যাপ্ত হয় না। বিদ্যালয়ে নেই বাথরুম, নেই টিউবয়েল। এই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীসহ সকলের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রহমত আলী জানান, ‘আমাদের প্রধান সমস্যা হল বিল্ডিং নেই। আগে যে বিল্ডিংটা ছিল এটা পরিত্যক্ত। এই পরিত্যক্ত ভবনেই ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করতে হয়। যদিও একটি টিনশেড ঘর তৈরী করে ৪টি ছোট ছোট কক্ষ তৈরী করা হয়েছে কিন্তু তাতে শিক্ষার্থীদের জায়গা হচ্ছে না। বিদ্যালয়ে নেই ওয়াশ ব্লক, নেই মানসম্মত বাথরুম। শিক্ষকদেরও বসার কোন ব্যবস্থা নেই। বিদ্যালয়ে নতুন একটি ভবন খুব প্রয়োজন।’

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ছিদ্দিকুর রহমান জানান, বিদ্যালয়ে নতুন ভবন করার জন্য শিক্ষার্থীদের ভর্তির উপর নির্ভর করে। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন একটি ৪ কক্ষবিশিষ্ট ঘর করা হয়েছে। নতুন আরেকটি ঘর নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।