কেয়ার ভিসা প্রসেসে ব্যর্থ হয়ে আত্মগোপন করেছেন সিলেটের শিবগঞ্জস্থ বি-এইচ এডুকেশনের সিইও আহমদ আব্দুল্লাহ। আর তার খেসারত দিতে হচ্ছে ওই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মো. গোলাম এলাহী আবেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের। প্রতিদিনই তার বাড়ির আশাপাশে সশস্ত্র গুন্ডাটাইপের লোকজন ঘোরাফেরা করছে এবং নানাভাবে তাদের হুমকি ধমকি দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন আবেদের পিতা ৪০নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ কুশিঘাট পালপুরের বাসিন্দা মো. নুরুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে আবেদের মা ও উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে আবেদ শিবগঞ্জের বি-এইচ এডুকেশন নামক কনসালটেন্সি ফার্মের ম্যানেজার হিসাবে কাজ করছিলো। কিন্তু গত ১১ মার্চ সকালে ওই প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সে তা বন্ধ দেখতে পায়। আব্দুল্লাহর মোবাইলও ছিলো বন্ধ। তখন সেখানে আরও অনেক কাষ্টমার উপস্থিত হয়ে হইচই শুরু করেন। আব্দুল্লাহর সাথে যোগাযোগ সম্ভব হলে সবাইকে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আবেদও সেখান থেকে চলে আসে। এরপর থেকেই আব্দুল্লাহ আত্মগোপনে। তার সন্ধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলো আমার ছেলে আবেদ। এ অবস্থায় গত ১৭ ও ১৮ মার্চ সন্ধ্যা থেকে গভির রাত পর্যন্ত আমার বাড়ি ও আশপাশে প্রচুর লোককে সন্দেহজনক ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। তাদের কয়েকজন আমার বাড়িতে প্রবেশ করে আবেদের নাম ধরে গালাগাল করতে থাকে। তারা আমাদেরও নানা হুমকি ধমকি দেয়। প্রায়ই এরকম ঘটনা ঘটছে। এ নিয়ে আমরা চরম আতঙ্কিত।’
তিনি বলেন, ‘আবেদ ওই প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুবাদে সততার সাথে সে তার দায়িত্ব পালন করেছে। কোনো কাষ্টমারের সাথে সে কোনো চুক্তি করেনি। বরং আব্দুল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী কাষ্টমাররা মাঝে মাঝে তার কাছ নগদ টাকা দিলে সে তা আব্দুল্লাহর হাতে তুলে দিয়েছে বা ব্যাংকে জমা দিয়েছে। এখানে আমার ছেলের দোষ কোথায়? যেসব কাষ্টমারের টাকা নিয়ে আত্মগোপন করেছে আব্দুল্লাহ, তাদের প্রতি আমিও সমব্যথি। আমার ছেলে এবং আমার পরিবারের সবাই সমব্যথি। তারা যদি আইনগতভাবে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তাহলে আমি আমার ছেলে ও আমার পরিবারের লোকজন সর্বাত্মক সহযোগীতা করতে প্রস্তুত। তবে আপনারা আমাদের পেছনে গুন্ডা বা সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে ভিতি ছড়াবেন না। বিনাদোষে আমার সন্তানের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলবেন না।’
তিনি আব্দুল্লাহকে খুঁজে বের করতে সিলেটের পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আব্দুল্লাহকে খুঁজে বের করে কাষ্টমারদের টাকা আদায় করতে এবং আবেদের নিজেরসহ পরিবারের অন্যান্যদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আবেদ নিজে বাদী হয়ে এসএমপির শাহপরান থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছে।
আর বি-এইচ এডুকেশনের প্রতারিত কাষ্টমারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিনাদোষে আমাদের হয়রানি না করে হুমকি ধমকি দিয়ে বা আতঙ্ক না ছড়িয়ে আইনের আশ্রয় নিন, আবেদসহ আমরা সবাই আপনাদের সাথে থাকবো এবং সহযোগীতা করবো।’
কাপুরুষের মতো আত্মগোপনে না থেকে প্রকাশ্যে এসে কাষ্টমারদের সমস্যা সমাধান করতে তিনি আব্দুল্লাহর প্রতি আহ্বান জানান।