ভারতের ওড়িশা রাজ্যের বালেশ্বরের কাছে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় অন্তত ৩০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৩০০ জন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত যাত্রীদের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ৭ টা ২০ মিনিটে বালেশ্বর জেলার বাহাঙ্গা বাজার স্টেশন এলাকায় ঘটে এই দুর্ঘটনা।
পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে কলকাতার শালিমার স্টেশন থেকে তামিলনাড়ু রাজ্যের রাজধানী চেন্নাইয়ের উদ্দেশে কলকাতার শালিমার স্টেশন থেকে ছেড়ে যায় ১২৮৪১ আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস। তারপর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পার হয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ ট্রেনটি পৌঁছায় বালেশ্বরে। তার আরও এক ঘণ্টা ২০ মিনিট পর বাহাঙ্গা বাজারের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ২৩ কামরার ট্রেনটি।
ভারতের কেন্দ্রীয় রেল দপ্তরের দক্ষিণপূর্ব শাখার শীর্ষ জনসংযোগ কর্মকর্তা বলেন, ‘বালেশ্বরের কাছে করমণ্ডল এক্সপ্রেসে কিছু একটা হয়েছে। আমরা কোনোভাবে এখনও কিছু জানতে পারিনি। জানার চেষ্টা করছি।’
এদিকে হিন্দুস্থান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্ঘটানার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে প্রায় ৫০টি অ্যাম্বুলেন্স। তবে হতাহতের সংখ্যা এত বেশি যে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে সেগুলো। ওড়িষা রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ সচিব প্রদীপ জেনা এক টুইটবার্তায় জানিয়েছেন, আহতদের হাসপাতালে নিয়ে আসতে বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করছে রাজ্য প্রশাসন।
গোবিন্দ মণ্ডল নামে দুর্ঘটনার শিকার এক যাত্রী হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, ‘আমি বাঁচার আশা পুরোপুরি ছেড়ে দিয়েছিলাম। মনে হয়েছিল, আমি মরে গেছি। তারপর কামরার কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে আমিও ভাঙা একটি জানালা দিয়ে কো রকমে বের হয়ে আসি।’
গোবিন্দ মণ্ডল আহত হয়েছেন— তবে সেই আঘাত গুরুতর নয়। স্থানীয় একটি হাসপাতাল প্রাথমিক চিকিৎেসা শেষে তাকে ছেড়ে দিয়েছে।
‘কিন্তু ট্রেনের বহু মানুষ গুরুতর আহত হয়েছেন। আমি যে কামরায় ছিলাম সেখানেই এমন কয়েকজনকে দেখেছি জানালা দিয়ে বের হওয়ার সময়,’ হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন গোবিন্দ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, একটি মালগাড়ির সঙ্গে মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়েছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেসের। এর ফলে ট্রেনের প্রথম তিনটি কামরা বাদে সবক’টি কামরাই লাইন থেকে ছিটকে পড়ে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সংবাদকর্মীরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার অভিঘাত এতটাই বেশি ছিল যে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনটি মালগাড়ির উপর উঠে গেছে।