বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (সিকৃবিশিস)
রবিবার (২৪ শে মার্চ) সিকৃবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. ছফি উল্লাহ ভুইঁয়া ও সাধারণ সম্পাদক ডা. মোহাম্মদ আল মামুন স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক গত ১৩ই মার্চ ২০২৪ তারিখে একটি বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন (এস আর ও নং-৪৭-আইন/২০২৪) জারি করা হয়েছে যা সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এই প্রজ্ঞাপনে সকল স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তার অধীন অঙ্গ প্রতিষ্ঠানসমূহে আগামী ০১ জুলাই ২০২৪ তারিখ ও তৎপরবর্তী সময়ে নূতন যোগদানকৃত সকল চাকুরীজীবীকে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতাভুক্ত করা হয়েছে। এমন একটি প্রজ্ঞাপন জারির ফলে সারাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দের মতো সিকৃবি শিক্ষকবৃন্দের মধ্যেও চরম হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং এ বিষয়ে সিকৃবি শিক্ষক সমিতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
সিকৃবি শিক্ষক সমিতি মনে করে এরূপ বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন বাংলাদেশের সংবিধানের মূল চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শিক্ষা দর্শনের প্রতি চরম অবমাননা প্রদর্শনের শামিল। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে জাতির পিতা বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে স্বায়ত্তশাসন প্রদান করে শিক্ষা ও গবেষণাকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন এবং শিক্ষকদের জাতি গড়ার কারিগর হিসেবে মূল্যায়ন করেছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে তাঁরই আদর্শের উত্তরসূরি জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা একটি উন্নত-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সিকৃবি শিক্ষক সমিতি মনে করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাকে বাধাগ্রস্ত করতে এই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে একটি স্বার্থান্বেষী মহল গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। তাই অনতিবিলম্বে এই প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজকে প্রাপ্য সম্মান ও ভবিষ্যত সুরক্ষা প্রদানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছে।
বৈষম্যমূলক পেনশনের প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবি করে বিবৃতিতে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো. ছফিউল্লাহ ভুইঁয়া ও সাধারণ সম্পাদক ডা. মুহাম্মদ আল মামুন যৌথভাবে জানান, ‘বৈষম্যমূলক পেনশনের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভবিষ্যতে যারা যোগদান করবেন তাঁরা মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ফলশ্রুতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় মেধাবী শিক্ষক এর ঘাটতি দেখা দিবে যা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে পঙ্গু করে দিবে। অনতিবিলম্বে এই বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজের মধ্যে সৃষ্ট হতাশা ও অসন্তুষ্টি লাঘব করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয় প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দেশের সব স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীন অঙ্গপ্রতিষ্ঠানগুলোর চাকরিতে যেসব কর্মকর্তা বা কর্মচারী চলতি বছরের ১ জুলাইয়ের পর যোগ দেবেন, সরকার তাঁদের সর্বজনীন পেনশনের আওতাভুক্ত করল।