সিলেটের বিশ্বনাথে ৫০ লাখ টাকা মূল্যের একটি ফ্ল্যাট এক প্রবাসীর কাছে বিক্রি করেও সেটি রেজিস্ট্রি করে না দিয়ে জবরদখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন আরেক প্রবাসী।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এমন অভিযোগ করেছেন বিশ্বনাথ উপজেলার দশপাইকা গ্রামের মৃত সোনাফর আলীর ছেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল হান্নান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, আরেক যুক্তরাজ্য প্রবাসী, বিশ্বনাথের সুড়িরখাল গ্রামের মফিজ আলীর ছেলে মো. সুনু মিয়ার (৬৮) কাছ থেকে ২০১২ সালে বিশ্বনাথ পৌর এলাকার আল মদিনা হাউজিং এস্টেটের ২ নম্বর ভবনের নিচতলায় দেড় হাজারের বেশি বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট ৩০ লাখ টাকায় ক্রয় করেন আব্দুল হান্নান। পরে তিনি ২০১৮ সালে একই হাউজিংয়ের ৬ নম্বর ভবনের তৃতীয় তলায় ১৮৫০ বর্গফুটের আরেকটি ফ্ল্যাট ৫০ লাখ টাকায় সুনু মিয়ার কাছ থেকে ক্রয় করেন। কিন্তু ওই সময় আব্দুল হান্নান ও সুনু মিয়া লন্ডনে অবস্থান করায় ৬ নম্বর ভবনের ক্রয়কৃত ফ্ল্যাটটি রেজিস্ট্রি করা হয়নি। এক পর্যায়ে লোভে পড়ে হান্নানের নিকট বিক্রয় করা ২ নম্বর ভবনের ফ্ল্যাটটি জোরপূর্বক দখল করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন সুনু মিয়া। এ অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসন ও মুরুব্বিদের মধ্যস্থতায় ৩০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে সুনু মিয়ার নিকট ফ্ল্যাটটি আবার ফিরিয়ে দেন হান্নান।
সম্প্রতি উভয় ফ্ল্যাট পরস্পরকে রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্তে সুনু মিয়া ও হান্নান এক সঙ্গে দেশে আসেন। কিন্তু দেশে এসে সুনু মিয়া ৬ নম্বর ভবনের ফ্ল্যাটটি রেজিস্ট্রি করে না দিয়ে ২ নম্বর ভবনের ফ্ল্যাটটি রেজিস্ট্রি করে দিতে হান্নানকে চাপ দেন। এতে হান্নান মিয়া সম্মত না হলে ৬ নম্বর ভবনের ফ্ল্যাটটি তাকে ছেড়ে দিতে বলেন এবং জোরপূর্বকভাবে দখল করার চেষ্টা চালান সুনু মিয়া। ফ্ল্যাট না ছাড়লে হান্নান মিয়ার পরিবারকে সেখান থেকে বের করে দিয়ে তালা মেরে দেবেন, এমনকি তাদের প্রাণে মেরে লাশ গুম করে দেওয়ারও হুমকি দেন সুনু মিয়া।
স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে ও শেল্টারে প্রবাসী সুনু মিয়া এমনটি করছেন উল্লেখ করে আব্দুল হান্নান সংবাদ সম্মেলনে আরও জানান, তিনি লন্ডনে থাকা অবস্থায় সুনু মিয়া ভাড়াটে লোকজন দিয়ে আব্দুল হান্নানের স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হয়রানি করেন। এ বিষয়ে ২০২১ সালের ১৯ অক্টোবর আব্দুল হান্নানের স্ত্রী সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। এছাড়া এ পর্যন্ত বিশ্বনাথ থানায় দুটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। এসবের পরও সুনু মিয়ার অত্যাচার থেমে থাকেনি। এ অবস্থায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আব্দুল হান্নান প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।