বিশ্বনাথে প্রবাসীর জায়গায় ঘর নির্মাণের অভিযোগ

সিলেটের বিশ্বনাথে আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকাবস্থায় সৌদী প্রবাসী রোশন আলীর (৭০) পক্ষের জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে হিরণ মিয়া নামের এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।

গত শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতের আঁধারে উপজেলা রামপাশা বাজারে ৪.৩১ শতক জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণ করা হয়েছে, যার মূল্য প্রায় ১২ লাখ টাকারও বেশি। এমন অভিযোগ এনে গত শনিবার রাতে বিশ্বনাথ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জমির মালিক সৌদী প্রবাসী রোশন আলী

রোশন আলী উপজেলার খাজাঞ্চি ইউনিয়নের কুড়িখলা গ্রামের হাজী ইসকন্দর আলীর ছেলে। আর অভিযুক্ত হিরণ মিয়া রামপাশা গ্রামের মহবত আলীর ছেলে।

জানা গেছে, ২০০৭ সালে রামপাশা বাজারে জনৈক আব্দুল হকের কাছ থেকে (মৌজা-রামপাশা, জেল নং-৫৭, দাগ নং- ৩৩৮৪) ৮ শতক জায়গা ক্রয় করেন রোশন আলী, তার ভাই সামির আলী, শরফত আলী ও বোন আজিরুন নেছা। এসএ খতিয়ানে জায়গার মালিক রয়েছেন মহব্বত আলী ও তার ৪ বোন। ১৯৭৫ সালে ওই জায়গা জনৈক জব্বার আলীর নিকট বিক্রয় করেন মহব্বত আলী। এরপর ১৯৯৭ সালে জনৈক জমির আলী ও রুশনা বেগমের নিকট জায়গাটি বিক্রয় করেন জব্বার আলী। বিএন জরিপে জমির আলী ও রুশনা বেগমের নামে ক্রয়কৃত জায়গা রেকর্ড হয় এবং ২০০৬ সালে জনৈক আব্দুল হকের কাছে জায়গা বিক্রয় করেন জমির আলী ও রুশনা বেগম।

২০০৭ সালে আব্দুল হকের কাছ থেকে ওই ৮ শতক জায়গা ক্রয় করে ভোগ-দখল করেন সৌদী প্রবাসী রোশন আলী। জায়গায় অংশিদারী দাবি করেন এসএ খতিয়ান মূলে মালিক পচন বিবির নাতি রামপাশা বাজারের ব্যবসায়ী হিরন মিয়া। তিনি এ বিষয়ে ২০১৫ সালে সিলেট ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বর ৭৫৩/২০১৫)। মামলাটি আদালতে বিচারাধিন থাকাবস্থায় গত শুক্রবার বিরোধপূর্ণ ওই জায়গায় ঘর নির্মাণ শুরু করেন হিরণ মিয়া। খবর পেয়ে জমির মালিক রোশন আলী ঘটনাস্থলে গিয়ে বাধা দিলেও তাকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে নির্মাণকাজ চালিয়ে যান হিরণ মিয়া।

এ ব্যাপারে রোশন আলী জানান, আদালতে মামলা চলমান রেখে জোরপূর্বক তার জায়গা দখল করে রাতের আঁধারে ঘর নির্মাণ করছেন ব্যবসায়ী হিরন মিয়া। খবর পেয়ে তিনি তার জায়গায় ঘর নির্মাণ করতে নিষেধ করেন। কিন্তু এতে নির্মাণকাজ বন্ধ না করে হিরন মিয়ার পক্ষ উল্টো রোশন আলীর পক্ষকে হুমকি দিয়ে ঘর নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

আর হিরণ মিয়া জানান, রাতের আঁধারে নয়, দিনে-দুপুরেই সম্প্রতি তিনি এই জায়গায় ঘর নির্মাণ করেছেন। সেখানে ৮ শতক জায়গার মধ্যে ৪.৩১ শতক জায়গায় ফরাজি সূত্রে তার মালিকানা রয়েছে। এছাড়া দীর্ঘদিন থেকে তিনি ভোগ-দখলও করে আসছেন।

বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী আতাউর রহমান বলেন, লিখিত নয়, মৌখিক একটি অভিযোগ পেয়েছি। তবে জমির মালিক যদি উচ্ছেদের জন্য কোর্টের কোনো লিখিত আদেশ নিয়ে আসেন, তাহলে অবশ্যই উচ্ছেদ করা হবে।