২০১২ সালের ৮ অক্টোবর সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার সিংগেরকাছ বাজারে পূর্ব বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের সংঘর্ষ ও ডাবল মার্ডারের দুই মামলায় ১ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ১২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন আদালত।
একই সাথে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম সিরাজসহ ৪২ জন বেকসুর খালাস পেয়েছেন।
দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর মামলা বিচারাধীন থানার পর বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সিলেটের অতিরিক্ত দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক মো. ইব্রাহিম আলী ওই মামলা দুটির মামলার রায় ঘোষণা করেন।
পূর্ব বিরোধের জের ধরে ২০১২ সালের ৮ অক্টোবর দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত হন সিংগেরকাছ (পশ্চিমগাঁও) গ্রামের আব্দুর নূর ও আব্দুল খালিক। ঘটনার পর নিহত আব্দুল খালিকের পুত্র নূর উদ্দিন বাদী হয়ে প্রতিপক্ষের ৪৩ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেন (বিশ্বনাথ জিআর মামলা নং ১৭৪/২০১২ইং)। অপরদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রতিপক্ষের আজমান আলী বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। (মামলার জিআর মামলা নং ১৭৮/২০১২ইং)।
নূর উদ্দিনের দায়েরকৃত মামলায় উপজেলার সিংগেরকাছ (পশ্চিমগাঁও) গ্রামের মৃত ইন্তাজ আলীর পুত্র অভিযুক্ত আব্দুল কাদিরকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, একই গ্রামের মৃত সমুজ আলীর পুত্র আব্দুল মনাফ, তার পুত্র সুহেল ও মৃত আছদ্দর আলীর পুত্র ইলিয়াছ আলীকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লক্ষ টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ২ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, দশঘর গ্রামের মৃত ওয়াছিদ উল্লাহর পুত্র ধন মিয়াকে ৩ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং সিঙ্গেরকাছ (পশ্চিমগাঁও) গ্রামের মৃত তেরাব আলীর পুত্র আব্দুল মতিন, মৃত আরব আলীর পুত্র ইসলাম উদ্দিন, মৃত ইউনুছ আলীর পুত্র আলম, ইজার আলীর পুত্র রেজাউল করিম ও ছাতক উপজেলার কাদিপুর গ্রামের গেদু মিয়ার পুত্র রুবেলকে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত।
অপরদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় আজমান আলী বাদী হয়ে দায়েরকৃত মামলায় নূর উদ্দিন পক্ষের সিঙ্গেরকাছ (পশ্চিমগাঁও) গ্রামের মৃত রাশিদ আলীর পুত্র দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবারক আলী এবং একই গ্রামের মৃত মদরিছ আলীর পুত্র আকবর আলীকে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ের ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত।
রায় ঘোষণার পর আদালত সাজাপ্রাপ্ত আসামি আব্দুল মনাফ, ধন মিয়া, আব্দুল মতিন, রুবেল, আবারক আলী ও আকবর আলীকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আব্দুল কাদির এবং সাজাপ্রাপ্ত আসামি সুহেল, ইলিয়াছ আলী, ইসলাম উদ্দিন, আলম, রেজাউল করিম পলাতক রয়েছেন।