বিয়ানীবাজারে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে জনপদ, রক্ষায় নেই পদক্ষেপ

বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের আঙ্গুরা মোহাম্মদপুর, ফাঁড়িরবাজার, আঙ্গুরাসহ বিস্তীর্ণ জনপদ কুশিয়ারা নদীর ভাঙনে দিন দিন বিলীন হয়ে যাচ্ছে। নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সড়ক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বসতবাড়ি ও কবরস্থান। গত কয়েক বছরে ভাঙনের তীব্রতা বাড়লেও ভাঙন রোধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ।

সিলেট পাউবো অফিস সূত্রে জানা গেছে, কুশিয়ারা ভাঙন রোধের ব্যাপারে একটি সম্ভাব্যতা যাচাই কাজ চলছে। গত দুই বছরেও এই সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হয়নি। যাচাই শেষ হলে ভাঙনরোধে প্রকল্প প্রণয়ন করা হবে। তবে কবে নাগাদ সম্ভাব্যতা যাচাই শেষ হবে, তারও নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। যথাসময়ে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় ছোট হয়ে আসছে আঙ্গুরা মোহাম্মদপুর, আঙ্গুরা এলাকাসহ আশপাশের মানচিত্র। ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকায় আঙ্গুরাপুর মাদ্রাসা স্থানান্তর করা হয়েছে। একইভাবে নদীতে বিলীন হওয়ায় গ্রামের মসজিদ স্থানান্তর করেছেন গ্রামবাসী।

সরেজমিন দেখা যায়, কুড়ারবাজার ইউনিয়নের আঙ্গুরা ও আঙ্গুরা মোহাম্মদপুর এলাকা, স্থানীয় ফাঁড়িরবাজার, আঙ্গুরা মোহাম্মদপুর মাদ্রাসা, কবরস্থান এবং নদীর তীর ধরে গ্রামবাসীর চলাচলের রাস্তা বিলীন হয়েছে। গ্রামের মানুষ চলাচল করছেন বসতঘরের উঠান কিংবা ফসলের মাঠের আইল দিয়ে।

আঙ্গুরা মোহাম্মদপুর গ্রামের তজম্মুল আলী জানান, প্রায় এক দশক আগে নদীতে ভাঙন শুরু হলেও এখন পর্যন্ত ভাঙনরোধে সরকার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তীব্র ভাঙনের ফলে ফাঁড়িরবাজারে তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন।

ফাঁড়ির বাজারের ব্যবসায়ী আবদুল আলিম জানান, তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনের সড়কসহ অর্ধেক অংশ নদীতে বিলীন হয়েছে। সব সময় ভাঙন আতঙ্কের মধ্যে আছেন। দোকানের সামনের সড়ক নদীতে চলে যাওয়ায় তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ক্রেতা আসে না বললেই চলে।

স্থানীয় বাসিন্দা বেলাল আহমদ জানান, তাঁর বসতবাড়ির পুরো উঠান নদীতে চলে গেছে। এখন শুধু ঘরটিই আছে। বাচ্চাদের নিয়ে কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। সে জন্য আতঙ্কের মধ্যে এখানেই পড়ে আছেন। পরিবারের সঙ্গে রাত জেগে পালা করে পাহারা দেন। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গ্রামের প্রায় অর্ধশত বাড়ি নদীতে বিলীন হলেও ভাঙন বন্ধ করতে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

ভাঙন রোধে প্রকল্প প্রণয়ন করা হবে জানিয়ে সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ বলেন, সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে। এটি শেষ হলে প্রকল্প প্রণয়ন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হবে।