বিয়ানীবাজারের মাথিউরায় বৃদ্ধ আব্দুল ওহাব (৭০) হত্যার প্রায় ১৪ বছর পর আদালত রায় প্রদান করেছেন। মামলার এজাহার নামীয় দুই আসামীর যাবজ্জীবন এবং একজনকে ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। আদালত রায় ঘোষণাকালে মামলার অপর আসামিদের বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
রোববার দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের বিচারক শায়লা শারমিন এই রায় ঘোষণা করেন।
আদালতের এ রায়ে সন্তুষ্টি জানিয়েছেন নিহতের ছেলে আসুকুর রহমান। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এরকম একটি সংবাদ শোনার জন্য আমরা অপেক্ষায় ছিলাম। আমরা প্রধান যে তিনজনকে অভিযুক্ত করেছিলাম আদালত তাদের মধ্যে দু’জনকে যাবজ্জীবন এবং একজনকে ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছেন। এ রায়ে আমরা খুশি হয়েছি। তবে এ রায়ে অপর দুই আসামী রেদওয়ান আহমদ ও শরফ উদ্দিনকে বেকসুর খালাস প্রদান করায় তাদের শাস্তির দাবিতে উচ্চ আদালতে নিকট আমরা আপিল জানাবো।
ঘোষিত রায়ে প্রতিবেশী আপন দুই ভাই আজাদ উদ্দিন ও আলতাফ হোসেনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত। তারা উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের মাথিউরা দুধবকসী গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। এছাড়া মামলায় তৃতীয় আসামী ইসলাম উদ্দিনকে ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেন আদালত। ইসলাম উদ্দিন একই গ্রামের আব্দুশ শুকুরের ছেলে।
জানা গেছে, জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ২০০৯ সালের ৬ অক্টোবর প্রতিবেশী মৃত আব্দুর রাজ্জাকের দুই ছেলে আজাদ উদ্দিন ও আলতাফ হোসেন, আরেক প্রতিবেশী ইসলাম উদ্দিনসহ ৬/৭ জন লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মাথিউরা দুধবকসী গ্রামের নিহত আব্দুল ওহাবের বাড়িতে হামলা চালায় এবং বসতঘর ও গোয়ালঘর ভাংচুর করে। এসময় আব্দুল ওহাব ও তার দুই ছেলে বাঁধা দিতে গেলে আজাদ উদ্দিন ও আলতাফ হোসেন গংদের দেশীয় অস্ত্রের উপুর্যপরী আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন বৃদ্ধ আব্দুল ওহাব এবং ঘটনাস্থলেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এ ঘটনায় ৭জনকে আসামী করে নিহতের ছেলে জুনেদ আহমদ বিয়ানীবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা (মামলা নং-২, তারিখ- ০৬/১০/২০০৯ইং) দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিয়ানীবাজার থানার এসআই শেখ হাফিজুর রহমান আদালতে আজাদ উদ্দিন ও আলতাফ হোসেন এবং আরেক প্রতিবেশী ইসলাম উদ্দিনসহ ৭ জন জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
এদিকে, বাদী পক্ষের আইনজীবী হিসেবে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট. আব্দুল মুনিম এনাম। অপরদিকে, আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট এ.টি.এম মাসুদ (টিপু)।