ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া ভোটগ্রহণ শেষে গণনার কাজ চলছে। সকালের দিকে ভোটার উপস্থিতি বেশি থাকলেও বৃষ্টির কারণে বিকেলে ভোটার উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম। তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বি দুই প্রার্থীর একজন বিভিন্ন কেন্দ্রে তার এজেন্টদের হেনস্থা করে বের করে দিয়ে জাল ভোট দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। আরেকজনের অভিযোগ তার ভাই ও নির্বাচনী প্রধান এজেন্টের ওপর হামলা করা হয়েছে।
জানা যায়, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বর্তমান চেয়াম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মফুর (কাপ-পিরিচ), উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বোয়ালজুড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনহার মিয়া (আনারস) এবং সিলেট জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান শামস উদ্দিন শামস ঘোড়া) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৯৭ হাজার ৩১৭জন ভোটারের ভোট গ্রহণের জন্য বুধবার সকাল ৮টা থেকে ৩৬টি কেন্দ্রে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। সকালের দিকে ভোটারের উপস্থিতি বেশি থাকলেও ২টার দিকে বৃষ্টি হলে ভোটার উপস্থিতি কমে যায়। যার কারণে বিকেলে কোন কোন কেন্দ্র ছিল ভোটার শূন্য।
সরেজমিনে সকাল ১০টায় চান্দাইরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, মহিলা ও পুরুষ ভোটারের উপস্থিতি লক্ষ্যনীয়। ২ঘন্টায় ৭ শতাংশ ভোট দেয়া হয়েছে বলে জানা যায়। দুপুর সাড়ে ১২টায় একই কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ২৪ শতাংশ ভোট পড়েছে।
দুপুর ১২ টায় সোনাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, নারী ভোটারের লাইন কিছুটা দীর্ঘ হলেও পুরুষ ভোটারের উপস্থিতি একেবারেই কম। এসময় পর্যন্ত কেন্দ্রটিতে ২০ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে।
২টা ৭ মিনিটে উজিয়ালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্রে কিছু পুরুষ ভোটার রয়েছেন। এই সময় পর্যন্ত ৭০০ ভোট কাস্ট হয়েছে বলে জানা যায়।
দুপুর ২টা ৪৯ মিনিটে বোয়ালজুড় উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোটার উপস্থিতি না থাকায় দায়িত্বপ্রাপ্তরা বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন। এই সময় পর্যন্ত প্রায় ৪৩ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে বলে জানা যায়।
বিকেল ৩টা দশ মিনিটে রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোটার উপস্থিতি কম। ২টা পর্যন্ত ৪১ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে বলে জানা যায়।
বিকেল ৩টায় আদিত্যপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় এই সময় পর্যন্ত ৪৬ শতাংশ ভোট পড়েছে।
৩টা ৩৯ মিনিটে বালাগঞ্জ ডিএন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় পুরুষ লাইনে কিছু ভোটার থাকলেও মহিলা লাইন ছিল প্রায় ভোটার শূন্য। এই সময় পর্যন্ত প্রায় ৪৬ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে।
ভোট গ্রহণের শেষ পর্যায়ে চেয়ারম্যান প্রাথী আনহার মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ভোট শুরুর পর থেকে রিফাতপুর ভোটকেন্দ্রে বারবার এজেন্টদের বাধা দেয়া হয়েছে জাল ভোটের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে। সেন্টার দখলের চেষ্টা করা হয়েছে। রাজা পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বোয়ালজুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র দখলের উদ্দেশ্যে শতশত বহিরাগত মানুষ জড়ো হয়েছে। আরো কয়েকটি সেন্টার দখলের চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সকাল সাড়ে ১১টার দিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান মফুর বলেন, এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হচ্ছে। তবে বালাগঞ্জ ডিএন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে নির্বাচনী প্রধান এজেন্ট ও আমার ভাই মশিউর রহমান মসনুকে আক্রমণ করা হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর থাকায় একজনকে গ্রেফতার করেছে তারা। এ সময় আইন শৃঙ্খলার বাহিনীর প্রতি আরো কঠোর হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
দুপুর ২টার দিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী শামস উদ্দিন শামস বলেন, ভোটের পরিবেশ খুব ভালো। এখন পর্যন্ত বড় কোন অভিযোগ পাইনি।