হবিগঞ্জে ধর্ষণের অভিযোগে করা এক মামলা থেকে প্রায় দুই যুগ পর খালাস পেয়েছেন ৮৬ বছর বয়সী বৃদ্ধ দরছ মিয়া। মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে জমি-জমা বিক্রি করে নিঃস্ব হয়েছেন তিনি। দরছ মিয়া হবিগঞ্জের বাহুবলের পুটিজুরী ইউনিয়নের হরিশচন্দ্রপুর গ্রামের একজন কৃষক।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে ১৮ জুলাই হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার হরিশচন্দ্রপুর গ্রামে ধর্ষণের অভিযোগে দরছ মিয়া, বুলু মিয়া ও ইমান উল্লাহকে আসামি করে এক নারী মামলা করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়, ঘটনার দিন রাতে ওই নারী শৌচাগারে যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হলে তিন আসামি তাকে ধরে নিয়ে ধর্ষণ করে। মামলায় অপর দুই আসামি শুরু থেকে পলাতক থাকলেও দরছ মিয়া আইনি লড়াই চালিয়ে যান।
২৪ বছর আইনি লড়াই শেষে গত মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১–এর বিচারক সুদীপ্ত দাস এ মামলার দায় থেকে তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দেন।
এ প্রসঙ্গে দরছ মিয়া বলেন, মামলার বাদীর স্বামীর সঙ্গে আগে থেকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। আমাকে ফাঁসানোর জন্য আমার বয়স তখন ৬২ বছর, সে সময় আমার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ দুই যুগ ধরে আমি আইনি লড়াই করতে গিয়ে জমিজমা বিক্রি করে একবারে নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমার বয়স হয়েছে, মারা যাবো। মৃত্যুর আগে ন্যায় বিচার পেয়ে আমি সন্তুষ্ট।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবুল হাসেম মোল্লা (মাসুম মোল্লা) বলেন, ১৯৯৯ সালে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় চিকিৎসক ধর্ষণের কোনও আলামত পাননি মর্মে প্রতিবেদন দেন। এ ছাড়া ১২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেননি। ফলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত দরছ মিয়াসহ তিন জনকে এ মামলা থেকে খালাস দিয়েছেন।