স্থানীয় প্রভাবশালীদের অত্যাচারে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার উফতিরপার গ্রামের দুটি পরিবার। গ্রামের মৃত আব্দুস সত্তারের ছেলে খেলন মিয়া ও আমীর আলীর পরিবারের লোকজন বসতভিটায় ফিরতে না পারায় এখন বাধ্য হয়ে সিলেটে বসবাস করছেন।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন আমির আলীর চাচাতো ভাই ফারুক মিয়া।
উফতিরপাড় গ্রামের মৃত আব্দুস সত্তারের ছেলে ফারুক মিয়া সংবাদ সম্মেলনে জানান, একই গ্রামের হানিফ উল্লার ছেলে আজিজুল হক, সুলেমান মিয়ার ছেলে চান মিয়া, বিছি মিয়ার ছেলে ছমির মিয়া ও শুকুর মিয়ার ছেলে আবু তাহেরের মদদে সাইফুল ইসলাম ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। ওই চক্র গ্রামের আমীর আলী ও মৃত আব্দুস সত্তারের ছেলে খেলন মিয়ার পরিবারের উপর নির্যাতন-নিপীড়ন চালাচ্ছে। তাদের হামলা-মামলা ও বিভিন্ন হুমকির কারণে ওই দুটি পরিবার নিজ বসতভিটা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
ফারুক মিয়া জানান, প্রায় তিন বছর পূর্বে আমীর আলী ও খেলন মিয়ার পরিবারকে গ্রামের প্রভাবশালী মহলটি সালিশ বৈঠকের নামে গ্রামছাড়া করে। তারা দীর্ঘ ওই সময় ধরে আমীর আলী ও খেলন মিয়ার পরিবারের জমিও চাষ করতে দিচ্ছে না। সেইসাথে মৎস্য খামারগুলোর ক্ষতি করেছে। দুটি পরিবারের লোকজন গ্রামে ফিরতে চাইলে তাদেরকে একের পর এক হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। তাই বাধ্য হয়ে ওই দুটি পরিবার সিলেট নগরীতে বসবাস করছে।
ফারুক মিয়া আরো জানান, গত ১২ মার্চ সড়ক দুর্ঘটনায় ওই দুটি পরিবারের নিকটাত্মীয় নাছির নিহত হন। কিন্তু ওই প্রভাবশালী চক্রের বাধার কারণে নিজ গ্রামে নাছিরের লাশ দাফন করা সম্ভব হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে পার্শ্ববর্তী দুর্লভপুর গ্রামে লাশ দাফন করা হয়। এরপর আমীর আলী ও খেলন মিয়ার পরিবার গ্রামে শিরনি করতে গেলে সাইফুল ও তার সহযোগীরা ১৬ মার্চ সকাল ৮টার দিকে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সাথে নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় বেশ ক’জন গুরুতর আহত হন।
ফারুক জানান, এ ঘটনার পর উল্টো হামলাকারী সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে আহতদের আসামি করে শান্তিগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। তাছাড়া এ ঘটনা সালিশের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চালানো পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম ও রায়বাঙালী গ্রামের রুম্মানকেও মামলায় আসামি করা হয়।
ফারুক আরো জানান, সম্প্রতি তাদের আরেক আত্মীয় প্রবাসী সুজাত মিয়ার মা মারা গেলে সাইফুল ইসলাম ও তার সহযোগীদের হুমকির কারণে লাশ বাড়িতে নেওয়া যায়নি। তাই বাধ্য হয়ে সিলেটেই লাশ দাফন করতে হয়েছে।
ফারুক মিয়া প্রভাবশালী ওই চক্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নিরীহ দুটি পরিবারকে তাদের বসতভিটায় ফিরতে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল মহলের সহযোগিতা চান।