চিঠির মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমার আবেদন করে আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ চেয়েছেন অডিও কেলেঙ্কারিতে মন্ত্রিত্ব ও দলীয় পদ হারানো জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ি) আসনের সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসান।
বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ‘সাধারণ ক্ষমা’ চেয়ে আবেদন করেছেন তিনি।
জাতীয় সংসদের প্যাডে সাধারণ ক্ষমার জন্য আবেদন উল্লেখ করে মুরাদ বলেন, ‘আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়র রহমান তালুকদার ছিলেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি। জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ২০২১ সালে ৭ ডিসেম্বর ওই পদ থেকে আমাকে অব্যাহতি প্রদান করে। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে দৃঢ় প্রত্যয়ে অঙ্গীকার করছি যে ভবিষ্যতে এমন কোনো কর্মকাণ্ড করব না, যার ফলে আপনার বিন্দুমাত্র সম্মানহানি হয়। অতএব বিনীত নিবেদন এই যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রমে অংশ গ্রহণের সুযোগ প্রদান করে বাধিত করবেন।’
মুরাদের চিঠির বিষয়ে আওয়ামী লীগের ময়মনসিংহ বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, ‘উনার চিঠি পেয়েছি। উনাকে বহিষ্কার করা হয়নি, অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অব্যাহতি এবং বহিষ্কার এক নয়। উনার আবেদন কেন্দ্রীয় কমিটি আমলে নিলে তবে কোনো সিদ্ধান্ত হতে পারে। আপাতত কিছু হচ্ছে না।’
গত বছর এক চিত্রনায়িকার সঙ্গে ডা. মুরাদের অশালীন ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর তাকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর তিনি পদত্যাগ করলে ওই দিন রাতেই তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। একইদিনে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরি সভায় মুরাদ হাসানকে জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে মুরাদ হাসানকে তার নিজ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এর মধ্যে গত ৯ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে কানাডার উদ্দেশে দেশত্যাগ করেছিলেন তিনি। এরপর কানাডার টরন্টো পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছলেও তাকে সে দেশে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সেখান থেকে তাকে দুবাইগামী একটি ফ্লাইটে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু দুবাইতেও তাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। উপায় না পেয়ে আবার দেশে ফিরতে হয় তাকে। তিনি দেশে ফিরেছিলেন ১২ ডিসেম্বর। সেদিন বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি।
বিমানবন্দরে নামার পর সাংবাদিকদের এড়াতে মুরাদ হাসান আন্তর্জাতিক টার্মিনাল ব্যবহার না করে অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল দিয়ে বের হন। তিনি সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।