সিলেটে প্রতিপক্ষের ‘প্রাণ নাশের হুমকি’ থেকে পিতাকে রক্ষার আকুতি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মেয়ে তামান্না আকতার।
রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ২টায় জেলা প্রেসক্লাবে কনফারেন্স হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সালুটিকর এলাকার লামাপাড়া গ্রামের মো. সিদ্দেক আলীর (৪৫) মেয়ে তামান্না আক্তার।
তামান্না বলেন- ‘আমার বাবা সিদ্দেক আলী হাসপাতালের বিছানায়, জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। প্রাণে মারা উদ্দেশ্যে গ্রামের শফিক মিয়ার ছেলে শহিদ আহমদ (২৫) ও আলী আহমদ (২১), তাদের সহযোগী গ্রামের নুর মিয়ার ছেলে লোকেছ মিয়া (২৬), তুতা মিয়ার ছেলে নাছির উদ্দিন (৩০) এবং আবদুল লতিবের ছেলে ছবির মিয়া (৩৫) গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর রাত ৯টার দিকে আমার বাবার উপর অতর্কিত হামলা করে।’
তিনি আরও বলেন, ওইদিন তিনি বাড়ির পার্শ্ববর্তী বোরো ফসলের জমিতে পানি সেচ দিয়ে ঘরে ফিরছিলেন। স্থানীয় ‘এফডিএফ ব্রিক ফিল্ড’ পার হওয়ার সময় তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে আমার বাবাকে বেধড়ক মারধর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে আঘাত করতে থাকেন। বিশেষ করে তাঁর দুই হাত ও দুই পায়ে আঘাত করেন হামলাকারীরা। এমন আঘাতের ফলে আমার বাবার দুই হাত ও দুই পায়ের অন্তত ১০ স্থানে হাড় ভেঙে গেছে। তাঁর চিৎকারে ব্রিক ফিল্ডের ম্যানেজারসহ অন্য কর্মচারীরা বেরিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে আমরা দ্রুত গিয়ে বাবাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। এ ঘটনায় ৩ জানুয়ারি গোয়াইনঘাট থানায় মামলা দায়ের করলে বিবাদীরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে পড়েছেন। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন আমাদের। এমনকি বলছেন- দ্বিতীয়বার আক্রমণ করলে আমার বাবা আর বাঁচতে পারবেন না। এছাড়া আমাদের পরিবারের অন্য সদস্যদেরও জান-মালের ক্ষতি করার হুমকি দিচ্ছেন তারা। এ অবস্থায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি আমরা।’
লিখিত বক্তব্যে তামান্না আক্তার আরও বলেন- ‘অভিযুক্তরা গ্রামে একটি প্রভাবশালী কুচক্র গড়ে তুলেছেন। তারা গ্রামের নিরীহ মানুষদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। আমাদের সঙ্গে কিছু জায়গা-জমি নিয়ে তাদের বিরোধ রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সময় তাদের বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করেন আমার বাবা। তাই তারা আমার বাবার উপর ক্ষিপ্ত ছিলো। এরই ধারাবাহিকতায় তারা আমার বাবাকে হত্যা করতে চেয়েছিলো। এছাড়া বিবাদীদের কয়েকজন দুবাইসহ বিভিন্ন দেশের প্রবাসী। তারা স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে তারা অল্প দিনেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছেন এবং গ্রামের নিরীহ মানুষজনকে হয়রানি করা বাড়িয়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বর্ণের একটি বড় চালান ধরা পড়েছে। ওই চালানের সঙ্গেও নাকি তারা জড়িত ছিলেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। আসামিদের দাবি- তাদের এই স্বর্ণের চালান আটকের পেছনে আমার বাবার হাত রয়েছে। কিন্তু বিষয়টি আদৌ সত্য নয়। আমার বাবা একজন সহজ-সরল মানুষ। আমরা আমাদের নিরাপত্তার স্বার্থে আদালতেও একটি মামলা করেছি। কিন্তু আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় আবারও আক্রমণের আশঙ্কা করছি। এই অবস্থায় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতনদের আশু সুদৃষ্টি ও পদক্ষেপ কামনা করছি।’