সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক শিক্ষক। তিনি উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের প্যাকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জহিরুল হক।
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দোয়ারাবাজার প্রেসক্লাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মোঃ জহিরুল হক স্থানীয় এক পুলিশ সদস্য কর্তৃক হয়রানির অভিযোগ করে বলেন, ‘বাংলাবাজার ইউনিয়নের রামশাইরগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের পুত্র খুর্শেদ আলম। তিনি বাংলাদেশ পুলিশের একজন সদস্য হয়েও দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত এলাকায় বিভিন্ন ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছেন। তিনি করোনাকালে আমার দ্বিতীয় পুত্র বাক ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মোঃ মমিনুল হক শাওনকে আর্থিক লাভের প্রলোভন দেখিয়ে তার সঙ্গে সবজি ব্যবসার সাথে জড়িত করেন। এরই সুবাদে উভয়ের মধ্যে আর্থিক লেনদেন হয়। পরবর্তীতে লেনদেন নিয়ে ব্যবসায় সমস্যা সৃষ্টি হলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িক সমিতি কর্তৃপক্ষ খুর্শেদ আলমের কাছে থাকা শাওনের একটি খালি চেকের পাতা রেখে তাদের হিসাব নিকাশ নিঃস্পত্তি করে দেন। আমার পুত্রের দেওয়া চেকটি ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও পুলিশ সদস্য খুর্শেদ আলম ওই চেকটি আর ফেরত দেননি। চাকুরির ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে দেই-দিচ্ছি বলে টালবাহানা করতে থাকেন। আমার জানামতে আমার পুত্রের কাছে তিনি কোনো টাকা পয়সা পাননা।
তিনি আরও বলেন, এরই জেরে গত ৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় স্থানীয় বাংলাবাজারে আমাকে দেখতে পেয়ে খুর্শেদ আলম কিছু উশৃঙ্খল লোকজন নিয়ে হঠাৎ আমার দিকে তেড়ে আসেন এবং আমি কিছু ঝুঝে উঠার আগেই আমাকে টানা হ্যাঁচড়া করে আটকে রাখেন। এসময় খুর্শেদ আলম আমার ছেলের ৫০ লাখ টাকা পাবেন বলে দাবি করেন এবং আমাকে মারধর করতে উদ্যত হন। দাবিকৃত টাকা না দিলে আমাকে মারধর করবে এমনকি আমার ছেলেকে কখনো পেলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেন। ওই সময় খুর্শেদ আলম আমাকে প্রায় এক ঘন্টা আটকে রাখেন। পরে স্থানীয়রা এসে আমাকে তার কবল থেকে উদ্ধার করে নেন।’
তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘আমি একজন নিরীহ মানুষ। এখানে আমার আত্মীয়স্বজন বলতে কেউ নেই। খুর্শেদ আলম পুলিশে চাকরি করার সুবাদে প্রভাব খাটিয়ে আমাকে নিজ বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি দিয়ে আসছে। আমি ও আমার পরিবারের লোকজন এখন নিরাপত্তাহীনতায় আছি। আমি ও আমার পরিবার পরিজন তার কবল থেকে বাঁচতে চাই। এব্যাপারে আমি ন্যায় বিচার পেতে মাননীয় প্রধামন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এবং পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক জহিরুল হকের অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে জানতে চাইলে পুলিশ সদস্য মোঃ খুর্শেদ আলম অভিযোগের বিষয়গুলো সত্য নয় বলে মোবাইল কল কেটে দেন।
জানতে চাইলে দোয়ারাবাজার থানার ওসি বদরুল হাসান বলেন, ‘এব্যাপারে শিক্ষকের স্ত্রী আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে থানায় এসে বিষয়টি সমাধান হয়েগেছে বলে অভিযোগ পত্র ফিরিয়ে দেওয়ার কথাও বলেছেন। এরপরে কী হলো আমার জানা নেই।’