ঢাকা থিয়েটারের সাথে অংশীদারিত্বে রাজধানীর নিউ বেইলি রোডে অবস্থিত বাংলাদেশ মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে “নৈঃশব্দে ’৭১” (’৭১ ইন সাইলেন্স) শীর্ষক নাটকের মঞ্চায়ন করেছে ব্রিটিশ কাউন্সিল।
বাংলাদেশে ব্রিটিশ কাউন্সিলের ৭০ বর্ষপূর্তি এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনের অংশ হিসেবে এই নাটক মঞ্চস্থ করা হয়।
নাটকটি পরিচালনা করেন সিঙ্গাপুরের গ্লাসগো-ভিত্তিক মঞ্চ নাটক নির্মাতা রামেশ মেয়্যাপ্পান। তিনি একইসাথে ভিজ্যুয়াল ও ফিজিক্যাল থিয়েটার স্টাইল সামঞ্জস্য করার মাধ্যমে ব্যতিক্রমী পারফরমেন্স উপস্থাপন করেন।
এই ৩০ মিনিটের পারফরমেন্সে অংশ নেন দেশের আটটি বিভাগীয় শহরের ১৫ জন বিশেষভাবে সক্ষম শিল্পী। তারা অভিনয়ের বিভিন্নরকম পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে তুলে ধরেন।
ঢাকা থিয়েটারের সাথে অংশীদারিত্বে ব্রিটিশ কাউন্সিলের ডেয়ার (ডিজঅ্যাবিলিটি আর্টস রিডিফাইনিং এমপাওয়ারমেন্ট) প্রকল্পের একটি অংশ এই কার্যক্রম। ডেয়ার প্রকল্পের লক্ষ্য দেশের ডিজঅ্যাবিলিটি এবং শিল্পকলা খাতের মধ্যে সেতু বন্ধন এবং আস্থার জায়গা তৈরি করা। এটি শারীরিক বা মানসিক অক্ষমতার সাথে জড়িত সমাজের ভ্রান্ত ধারণা দূর করার পাশাপাশি শিল্পকলা, শারীরিক বা মানসিক অক্ষমতা ও সমাজের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করছে।
ঢাকা থিয়েটারের সাথে অংশীদারিত্বে ২০১৯ সালে ডেয়ার চালু হয়। এরপর থেকে এটি দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে কাজ করছে। এই প্রকল্পের অধীনে, ডিজঅ্যাবিলিটি আর্টের একটি টেকসই প্ল্যাটফর্ম তৈরির লক্ষ্যে ডিজঅ্যাবিলিটি থিয়েটার নিয়ে কীভাবে কাজ করা যায় সে সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা পেতে বিশেষভাবে সক্ষম শিল্পী এবং স্থানীয় নাট্য সংগঠনের শিল্পীরা একসাথে কাজ করছে।
রামেশ মেয়্যাপ্পান বলেন, “আমাকে যখন ইশারা ভাষায় বাংলাদেশের নামের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করা হয়, তখন আমি এই দেশের ইতিহাসের পেছনের আবেগ বুঝতে সক্ষম হই। কষ্ট ও বেদনার অসাধারণ অভিব্যক্তির মাধ্যমে এই ইতিহাস তুলে ধরতে এই দুঃসাহসী দলটি যে আগ্রহ দেখিয়েছে তা সত্যিই অতুলনীয়। এই মানুষগুলোর মনের কথা সবার সামনে প্রকাশের সুযোগ তৈরির মাধ্যমে সর্বস্তরের মানুষের কথা শোনা ও বোঝার প্রচেষ্টাকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমি ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং ঢাকা থিয়েটারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।”
বাংলাদেশ যুদ্ধের পূর্বে কেমন ছিলো, কীভাবে যুদ্ধ শুরু হয় এবং যুদ্ধের পরিণতির গল্প তুলে ধরার মাধ্যমে “নৈঃশব্দে ’৭১” নাটকে বাংলাদেশের জন্ম ইতিহাস মঞ্চায়িত হয়। ফিজিক্যাল স্টোরিটেলিং কৌশল ব্যবহার করে এই নাটকের মঞ্চায়ন করা হয়।
প্রসঙ্গত, বিশ্বজুড়েই সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ও শিক্ষার সুযোগ নিয়ে কাজ করে যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক সংস্থা ব্রিটিশ কাউন্সিল। শিল্প, সংস্কৃতি, ইংরেজি ভাষা ও শিক্ষার মাধ্যমে আমরা যুক্তরাজ্যের জনগণের সাথে অন্যান্য দেশের জনগণের মধ্যে সংযোগ, বোঝাপড়া ও আস্থা স্থাপনে কাজ করছে।