নেদারল্যান্ডসকে নিয়ে বোলিংয়েও রীতিমতো ছেলেখেলা করে বিশাল জয় পেয়েছে ভারত। যেখানে বোলিং করেছেন ভারতীয় একাদশের ৯ জনই। একইসাথে আজ বেঙ্গালুরুতে টস জিতে ব্যাটিং অনুশীলনও করে নিয়েছে ভারত! ডাচরাও সেই সুবিধা খানিকটা কাজে লাগিয়েছে। ভারতের বিপক্ষে আড়াইশো রান করতে পারাটা তাদের জন্য স্বস্তিরই বটে! যদিও শেষ পর্যন্ত তারা হেরেছে ১৬০ রানের ব্যবধানে।
এদিকে ভারতের এই জয়ে বাংলাদেশেরও লাভ হয়েছে! শেষ ম্যাচে ডাচদের হারে ৮ নম্বরে থেকে বিশ্বকাপের রাউন্ড রবিন লিগ শেষ করেছে বাংলাদেশ। তাতে ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির টিকিট নিশ্চিত করেছে টাইগাররা।
রোববার (১২ নভেম্বর) বেঙ্গালুরুর এম চিন্নস্বামী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৪১০ রান তুলেছে ভারত। দলের হয়ে অপরাজিত ১২৮ রান করেছেন শ্রেয়াস আইয়ার। তাছাড়া সেঞ্চুরি পেয়েছেন লোকেশ রাহুলও।
জবাবে খেলতে নেমে ৪৭ ওভার ৫ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৫০ রান সংগ্রহ করেছে নেদারল্যান্ডস। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৪ রান এসেছে তেজা নিদামানুরুর ব্যাট থেকে। ভারতের হয়ে দুটি করে উইকেট পেয়েছেন বুমরাজ, সিরাজ, কুলদীপ ও জাদেজা।
জয়ের জন্য ৪১১ রান তাড়ায় শুরুতেই ওয়েসলি ব্যারেসিকে হারায় নেদারল্যান্ডস। মোহাম্মদ সিরাজের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে উইকেটের পেছনে রাহুলের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। এরপর অবশ্য জুটি গড়ে তোলেন ম্যাক্স ও’ডাউড এবং কলিন অ্যাকারম্যান। তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৬১ রান। অ্যাকারম্যানকে বিদায় করে জুটি ভাঙেন কুলদীপ যাদব। বাঁহাতি এই স্পিনারের বলে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন ৩৫ রান করা অ্যাকারম্যান।
সঙ্গী হারিয়ে দ্রুতই বিদায় নিয়েছেন ও’ডাউড। রবীন্দ্র জাদেজার বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন ৩০ রান করা এই ব্যাটার। হাফ সেঞ্চুরির আগে বিদায় নিয়েছেন ৪৫ রানের ইনিংস খেলা সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট। শেষ দিকে তেজা নিদামানুরুর ৫৪ রানের ইনিংস কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছে। ভারতের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন জসপ্রিত বুমরাহ, সিরাজ, জাদেজা এবং কুলদীপ।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ভারতকে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন দুই ওপেনার গিল ও রোহিত। ইনিংসের শুরু থেকেই চার-ছক্কার বন্যা বইয়ে দিয়েছেন তারা দুজন। পাওয়ার প্লেতে ভারতীয় ওপেনারদের কোনো ধরনের চ্যালেঞ্জই জানাতে পারেননি নেদারল্যান্ডসের বোলাররা। তাতে করে প্রথম ১০ ওভারে ভারত কোনো উইকেট না হারিয়ে তোলে ৯১ রান। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন গিল।
তরুণ এই ওপেনার পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন মাত্র ৩০ বলে। যদিও হাফ সেঞ্চুরির পর দ্রুতই ফিরতে হয়েছে তাকে। পল ভ্যান মেকেরিনের বলে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে উড়িয়ে মেরেছিলেন গিল। তবে সীমানার কাছে দাঁড়িয়ে থাকা নিদামানুরু লাফিয়ে উঠে দুর্দান্ত এক ক্যাচ লুফে নিলে গিলকে ফিরতে হয়ে ৫১ রানের ইনিংস খেলে। গিল ফেরার পর হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন রোহিতও।
পঞ্চাশ ছুুঁতে ভারতের অধিনায়ককে খেলতে হয়েছে ৪৪ বল। গিলের মতো হাফ সেঞ্চুরির পর আউট হয়েছেন রোহিতও। বাস ডি লিডের ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারিতে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ব্যারেসির হাতে ধরা পড়েছেন ৬১ রান করা এই ব্যাটার। এরপর শ্রেয়াস আইয়ারকে সঙ্গে নিয়ে ভারতকে টানতে থাকেন কোহলি। তিনি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ৫৩ বলে। যদিও তাকে ফিরতে হয়েছে ৫১ রানের ইনিংস খেলে।
এর পরের গল্পটা কেবলই আইয়ার ও রাহুলের। ৪৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া আইয়ার তিন অঙ্কের ম্যাজিক্যাল ফিগার ছুঁয়েছেন ৮৪ বলে। সেঞ্চুরির পর আরও দ্রুত রান তুলতে থাকেন আইয়ার। ডানহাতি এই ব্যাটারকে দারুণভাবে সঙ্গ দেয়া রাহুলও সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। ডি লিডকে ছক্কা মেরে ৬২ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন রাহুল। যদিও সেই ওভারেই আউট হয়েছেন তিনি।
রাহুলকে থেমেছেন ৬৪ বলে ১০২ রানের ইনিংস খেলে। রাহুলের বিদায়ে ভাঙে আইয়ারের সঙ্গে তার ২০৮ রানের জুটি। এদিকে শেষ পর্যন্ত ৯৪ বলে ১২৮ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন আইয়ার। ভারত পায় ৪১০ রানের পুঁজি। নেদারল্যান্ডসের হয়ে দুটি উইকেট নিয়েছেন ডি লিড।