ছাত্র-জনতার ক্ষোভের মুখে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশছেড়ে পালাতে বাধ্য হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন ঢাকায় আনন্দ মিছিলে যোগ দেন এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী আয়াতুল্লাহ (২০)। এরপর থেকেই নিখোঁজ তিনি। নিখোঁজের ১১ দিন পর শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল মর্গে আয়াতুল্লাহর মরদেহ শনাক্ত করেছেন তার স্বজনেরা।
নিহত আয়াতুল্লাহ (২০) সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার চামরদানি ইউনিয়নের জলুষা গ্রামের মো. সিরাজুল ইসলামের ছেলে। পরিবারের লোকজনের সাথে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের জামতলা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বাস করতেন তিনি। সাত মাস আগে মা-বাবা নিজ এলাকায় ফিরে আসলেও সে তার বড়ভাই সোহাগের সাথে সেখানে থেকে যায়। আয়াতুল্লাহ গাজিপুরে ভান্নারা বাজার এলাকায় মারখাজুল ইমাম নামে একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনার পাশাপাশি টেক্সটাইল মিলে কাজ করতেন।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আয়াতুল্লাহ নিয়মিত আন্দোলনে অংশ নিতেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে বড়ভাই সোহাগ মিয়ার সাথে কালিয়াকৈর মৌচাক এলাকায় আনন্দ মিছিলে যোগ দেন তিনি। আনন্দ মিছিলটি সখিপুর আনসার ভিডিপি একাডেমির দিকে গেলে আনসার বাহিনীর সদস্যরা মিছিলে গুলি চালায়। এসময় কিছু লোক গুলিবিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।পর থেকেই সোহাগ আর আয়াতুল্লাহকে খোঁজে পায়নি। এরপর থেকে আয়াতুল্লাহর পরিবারের লোকজন গাজীপুর এবং ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতাল ও মর্গে খোঁজ নিতে থাকেন। এদিকে আয়াতুল্লাহকে না পেয়ে কালিয়াকৈর থানায় সাধারণ ডায়েরী তার পরিবারের লোকজন। অবশেষে শুক্রবার বিকেলে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল মর্গে আয়াতুল্লাহর মরদেহের সন্ধ্যান পায় তার পরিবার।’
এ বিষয়ে আয়াতুল্লাহর ভগ্নিপতি মো. মামুন মিয়া জানান, ‘মরদেহে গুলির চিহ্ন রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের কাছে মরদেহ হন্তান্তর করা হবে।’