নবীগঞ্জে ভুল তথ্য দিয়ে মসজিদের নাম পরিবর্তনের অভিযোগ

হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ প্রশাসনকে ভুল তথ্য দিয়ে মসজিদের নাম পরিবর্তন করে নিয়েছেন আরজান আলী নামের এক ব্যক্তি; এমনই অভিযোগ করেছেন মসজিদের জমি দাতার ছেলে আশাহিদ আলী আশা।

শনিবার (০৫ নভেম্বর) হবিগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে আশাহীদ আলী আশা এ অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ”নবীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ইনাতগঞ্জ জামে মসজিদের নাম মরহুম আলহাজ্ব আরজান আলী ভুল তথ্য দিয়ে বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসকের তালিকায় জালিয়াতির মাধ্যমে ‘ছালেহা জামে মসজিদ’ নামে লিপিবদ্ধ করিয়েছেন। মসজিদের নাম পরিবর্তন দেখে আমার পিতা তিলে তিলে কষ্ট যন্ত্রণা নিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নেন। ১৯৯৩/১৯৯৪ ইং সালে নবীগঞ্জ উপজেলার শতবর্ষী ইনাতগঞ্জ জামে মসজিদের পরিবর্তে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ‘ছালেহা জামে মসজিদ’ নামকরণ করে অবৈধ কমিটি গঠন করে মসজিদের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।”

এ অবস্থায় মসজিদের ভূমি দাতা পরিবারের সদস্য সাংবাদিক আশাহিদ আলী আশা ইনাতগঞ্জ জামে মসজিদের ভুয়া কাগজ দিয়ে নাম পরিবর্তন করে ছালেহা জামে মসজিদ নামকরণ, অবৈধ কমিটি গঠন করে মসজিদের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগসহ বিভিন্ন অভিযোগ ঢাকা ওয়াকফ প্রশাসক ও হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

আশা জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করেন। ইউএনও তদন্ত করে জেলা প্রশাসকের বরাবরে প্রতিবেদন প্রেরণ করেছেন। উক্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় মসজিদ কমিটির নিকট ২০১০ সালের পূর্বে কোন আয় ব্যয়ের হিসাব না থাকায় আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি অস্পষ্ট হওয়ায় অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। পাশাপাশি দায়িত্ব পালনে কমিটির অদক্ষতা প্রমাণিত হয়। এ বিষয়ে কমিটি পুণঃগঠনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসক বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসক ঢাকা বরাবরে প্রেরণ করেছেন।

এছাড়া, ২০০৯ ইং সালে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় শর্ত সাপেক্ষে মামলা আপোষ মীমাংসা করা হয়, কিন্তু আমিনুর গংরা মানেনি বলেও আশা সংবাদ সম্মলনে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ইনাতগঞ্জ জামে মসজিদের ২০১৮ইং সালে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও স্থানীয় চেয়ারম্যানে মধ্যস্থতায় ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে বসে হাজার মানুষের সামনে নবীগঞ্জ উপজেলার বিশিষ্ট বিচারক বোর্ডের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করে দেন। কিন্তু আমিনুর গংরা মানেনি। ২০২০ ইং সালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী কমিশনারসহ সাংবাদিক সুশীল সমাজ সামাজিকভাবে সমাধান করে দেন। কিন্তু আমিনুর গংরা মানেনি।

সংবাদ সম্মেলনে আশাহীদ আলী আশা বলেন, দীর্ঘ ৩১ বছর যাবৎ ইনাতগঞ্জ জামে মসজিদ নিয়ে অবৈধ কমিটির আমিনুর গংরা ক্ষমতা দেখিয়ে যা ইচ্ছে তাই করছে। আমিনুর রহমান প্রকাশ্যে লাইভে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মরহুম আরজান আলীর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে ভূমি দাতা পরিবারের উপর জুলুম অত্যাচার অব্যাহত রেখেছে। এ নিয়ে আদালতে মামলা পর্যন্ত হয়। স্থানীয় চেয়ারম্যান, মুরব্বীয়ানসহ উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন একাধিকবার শালিস বিচার করলেও অবৈধ কমিটি কোন রায়ই না মানায় তা ভেস্তে যায়। বর্তমানে ওই মসজিদ নিয়ে এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

যে কোন সময় বড় ধরনের দাঙ্গা হাঙ্গামা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।