সিলেট নগরীতে উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে বেওয়ারিশ কুকুরের উৎপাত। দিনের বেলাও দলবেঁধে নগরীর অলিগলিতে দাপিয়ে বেড়াতে দেখা যায়। এতে আতঙ্কের মধ্যে চলাচল করতে হচ্ছে নগরবাসীকে। বিশেষ করে প্রতিদিন সকালে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিপাকে পড়েন অভিভাবকরা।
বেওয়ারিশ কুকুর নিধন বা বংশবিস্তার রোধ বন্ধে আইন থাকায় কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না নগর কর্তৃপক্ষ। যার কারণে দিনে দিনে কুকুরের উৎপাত বেড়েই চলছে।
নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকাল-বিকাল প্রকাশ্যে দলবেঁধে বেওয়ারিশ কুকুর ঘুরাফেরা করে। পথচারীদের দেখে ঘেউ ঘেউ করে কামড়াতে আসে। বিশেষ করে মহিলা ও শিশুদের জন্য বেওয়ারিশ কুকুর দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পথচারী থেকে শুরু করে স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীরা কুকুর আতঙ্কে হাঁটা চলা করতে ভয় পান।
নগরীর বাগবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আব্দুল আউয়াল বলেন, সকালে বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলে যেতে ভয় করে। ১০-১২টা কুকুর দল বেঁধে বাসার গলির সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। মানুষ দেখলেই কামড়ানোর জন্য তেড়ে আসে। কুকুরের ভয়ে বাচ্চাদের স্কুলে একা যেতে দেই না।
একই এলাকার এতিম স্কুলের রোডের বাসিন্দা শফিকুর রহমান বলেন, দিনে রাতে সমান তালে কুকুরের উৎপাত থাকে। মাঝে মধ্যে একা হেঁটে যেতে ভয় করে। বেওয়ারিশ কুকুরগুলো দলবেঁধে কামড়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। খুব সাবধানে চলাচল করতে হয়।
নবাবরোড এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবি জিনিয়া সুলতানা বলেন, মাঝে মধ্যে বাসার সিঁড়িতে বসে থাকে কুকর। সব সময় গেইট বন্ধ করে রাখতে হয়।
তিনি বলেন, বেশিরভাগ কুকুরই বেওয়ারিশ। এসব কুকরের মধ্যে রোগাক্রান্ত বেশি। এগুলো জীবানু ছড়াচ্ছে। কুকুর নিধন করা না গেলেও অন্তত রোগাক্রান্ত কুকুরগুলোকে চিকিৎসা দেওয়া দরকার। যাতে তারা পরিবেশের ক্ষতি করতে না পারে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, এক সময় বেওয়ারিশ কুকুর নিধন করা হলেও এখন নিধন বা কুকরের বংশবিস্তার রোধ করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। যার কারণে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু এটা সত্য বেওয়ারিশ কুকুর অনেকাংশে বেড়ে গেছে।
তিনি বলেন, একসময় বংশবিস্তার রোধে পুরুষ কুকুরকে বন্ধ্যাত্ব করা হতো। কিন্তু এটা বন্ধে ২০১৬ সালে আইন করা হয়েছে। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে গেজেট করা হয়েছে। যার কারণে মালিকবিহীন কোনো কুকুরকে নিধন বা বংশবিস্তার রোধ করতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না।