দোয়ারাবাজারে দুই দফা দাবীতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে নেমেছেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা। রোববার সকাল থেকেই উপজেলার বাজারগুলোতে মাছ বিক্রি বন্ধ রেখে মৎস্য ব্যবসায়ীরা তাদের ধর্মঘটে শামিল হন। শুধু মাছ বিক্রিই নয়, ধর্মঘটের অংশ হিসেবে মৎস্য ব্যবসায়ীরা মাছ শিকারও বন্ধ রেখেছেন।
এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উপজেলাজুড়ে চলছে মাছের জন্য হাহাকার। সাধারণ মানুষজন বিষয়টি সুরাহা করতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
জানা গেছে, সম্প্রতি সহকারী কমিশনার ভূমি ফয়সাল আহমেদ নির্দেশে উপজেলা সদরে মাছবাজারের পাশে মোরগ ব্যবসায়ীরা দোকানপাট তৈরি করার উদ্যোগ নিলে মৎস্য ব্যবসয়ীরা এতে বাঁধা দেন। তখন মোরগ ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের নির্দেশনায় ঘর নির্মাণ করছেন বলে জানান।
পরে উপজেলা মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতৃবৃন্দ এ নিয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়সাল আহমেদর সঙ্গে বৈঠক করে মাছঘরের সাথে নদীর তীরে নৌকা ভিড়ানো স্থানে দোকানপাট তৈরি না করার অনুরোধ জানান। তখন তিনি প্রথমে মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতৃবৃন্দকে আস্বস্ত করেন। উদ্ভূত পরিস্থিতির মাঝেই শনিবার সকালে দোকান ঘর তৈরির জন্য বেজ তৈরি করেন মোরগ ব্যবসায়ীরা।
এ অবস্থায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন প্রতিকার না পেয়ে রোববার থেকে মৎস্য ব্যবসায়ীরা ব্যবসা বন্ধ করে ধর্মঘটের ডাক দেন। এতে উপজেলাজুড়ে মাছের হাহাকার দেখা দেয়। এসময় মৎস্য ব্যবসায়ীরা দুই দফা দাবি জানায়।
মৎস্য ব্যবসায়ী তাদের দুই দফা দাবি অনুযায়ী, মাছের ঘরের পাশে রাতারাতি যে দুটি ঘর তৈরি করা হয়েছে সেগুলো উচ্ছেদ করে ব্যবসায়ীদের নৌকা ভিড়ানোর জায়গা খালি করে দেয়ার জোর দাবী জানান।
মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি কবির আহমদ বলেন, ‘এসিল্যান্ড মহোদয় মৎস্য ব্যবসায়ীদের না জানিয়ে মাছঘর ঘেঁষে মোরগ বাজার স্থানান্তর করেন। বর্ষার সময় আমরা এখানে নৌকা ভিড়িয়ে মাছ ব্যবসা করি। মাছঘর ঘেঁষা মোরগবাজার সরিয়ে নেওয়া না হলে আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য মাছ ব্যবসার ধর্মঘট পালন করবো।’
সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফতেনূর বলেন, ‘এসিল্যান্ড মহোদয় একক সিদ্ধান্তে মাছঘর ঘেঁষে দোকানপাট ও মোরগবাজার করার অনুমতি দেওয়ায় আমরা বিপাকে আছি। আমাদের দাবি মেনে না নিলে মাছ ব্যবসা বন্ধ থাকবে।’
উপজেলা সদরের মাঝেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা বীরমুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলার ৫ ইউনিয়নের মানুষ উপজেলা সদরের মৎস্য ব্যবসায়ীদের উপর নির্ভরশীল। রোববার সকাল থেকে মাছ ব্যবসায়ীরা ব্যবসা বন্ধ করে ধর্মঘট পালন করায় আমরা ভোগান্তিতে আছি।’
শরীফপুর গ্রামের লালমিয়া বলেন, ‘বাজারে মাছ না থাকায় আমরা ভোগান্তি পোহাচ্ছি। এখন মাছ পাবো কোথায়। আশা করি প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শীঘ্রই ব্যবসায় ফিরবেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা।’
সদর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হামিদ বলেন, ‘এ বিষয়ে এসিল্যান্ড মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলে মৎস্য ব্যবসায়ীদের দাবি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফ মুর্শেদ মিশু বলেন, ‘এ বিষয়ে মৎস্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’