ভারতের উত্তর প্রদেশের লখিমপুরে দলিত দুই কিশোরীকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার পর স্থানীয় দলিত সম্প্রদায়ের সদস্যরা সেখানে বিক্ষোভ করেছেন।
দেশটির দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় লখিমপুর খেরি জেলার নিঘাসন থানার সীমানায় দলিত দুই নাবালিকা বোনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃত দুই বোনের একজনের বয়স ১৭ বছর অপরজনের ১৫ বছর। তাদের মরদেহ একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
স্থানীয় গ্রামবাসী এবং মেয়েটির পরিবার তিন যুবকের বিরুদ্ধে দুই কিশোরীকে গণধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ করেছে। মৃতদেহ দুটি উদ্ধারের পর গ্রামবাসী লখিমপুরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। এ সময় গ্রাম থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে নিঘাসন ক্রসিং অবরোধ করেন তারা।
পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লখিমপুর খেরির পুলিশ সুপার সঞ্জীব সুমন, এএসপি অরুণ কুমার সিং এবং অন্যান্য স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা গ্রামবাসী এবং মৃত দুই বোনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।
পুলিশ সুপার সঞ্জীব সুমন গ্রামবাসীদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, দ্রুত মামলাটির সমাধান করা হবে। তিনি গ্রামবাসীদের রাস্তা-অবরোধ প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান।
স্থানীয়রা বলেছেন, তমোলিয়াপুরা গ্রামের একটি আখের ক্ষেতে একই ওড়না দিয়ে ওই দুই কিশোরীর লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। তারা বলেন, ছোট বোনের পা মাটিতে লেগে ছিল এবং বড় বোনের লাশ শূন্যে ঝুলছিল। পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে দলিত ২ বোনকে ধর্ষণ ও শ্বাসরোধে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ওই দুই বোনকে ধর্ষণ ও হত্যার পর মৃতদেহ গাছে ঝুলিয়ে ঘটনার মোড় অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তমোলিয়াপুরা গ্রামের ৬ বাসিন্দাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, জোড়া খুন, ধর্ষণ ও অপরাধের প্রমাণ মুছে ফেলার চেষ্টা করেছেন স্থানীয় পাঁচ যুবক। তারা হলেন সুহাইল, জুনাইদ, হাফিজুল রেহমান, করিমুদ্দিন ও আরিফ। ছোটু নামের এক প্রতিবেশী ওই দুই কিশোরীর সঙ্গে এ ৫ জনের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। ছোটুকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
লখিমপুর খেরির পুলিশ সুপার সঞ্জীব সুমন বলেছেন, মঙ্গলবার ওই দুই কিশোরীকে একটি আখক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণ করেন সুহাইল ও জুনাইদ। আর এই দুজনের অপরাধের আলামত মুছে ফেলতে সহায়তা করেন বাকিরা।
তবে দুই বোন স্বেচ্ছায় সুহাইল ও জুনাইদের সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে ঘুরতে বেরিয়েছিল বলে পুলিশ জানালেও পরিবার বলছে ভিন্ন কথা। দুই বোনের পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, তাদের মেয়েদেরকে অপহরণ করা হয়েছিল।