দিরাইয়ে হাসপাতালের স্টোরকিপার আটকের পর ছাড়, তোলপাড়!

সুনামগঞ্জের দিরাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টোরকিপার গোলাম কিবরিয়াকে হাসপাতালের প্রায় দুই লাখ টাকা মূল্যের ইসিজি মেশিন ও কম্পিউটার প্রিন্টার মেশিনসহ বেশকিছু ঔষধপত্র নিয়ে পালানোর সময় আটকের পর থাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

তদন্তের দোহাই দিয়ে অভিযুক্ত কিবরিয়াকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (৫ জুন) দিবাগত রাত ঘটনাটি ঘটেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, যারা আটক করেছে তারাই জিনিসপত্র রেখে অভিযুক্ত স্টোর কিপারকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে এবং বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে তারা।

বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি করে। খবর পেয়ে বুধবার হাসপাতালে আসেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইয়াসিন আরাফাত। এসময় তিনি প্রত্যক্ষদর্শী হাসপাতালে কর্তব্যরত ঔষধ সেলসম্যান আবু সুফিয়ানের বক্তব্য শুনেন। এরপর ডা. মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্যকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করেন।

এদিকে অভিযুক্ত গোলাম কিবরিয়াকে স্টোর কিপারের অতিরিক্ত দায়িত্ব থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

জানা গেছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জনবল না থাকায় টিএলসিএ প্রজেক্টে কর্মরত গোলাম কিবরিয়াকে দুই বছর পূর্বে স্টোর কিপারের একটি অংশের দায়িত্ব দেয়া হয়। দায়িত্ব পেয়ে কিবরিয়া একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। ঘটনার দিন সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যদের সাথে দেনদরবার করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা খেয়েও জিনিসপত্র রেখে কৌশলে বাড়ি চলে যান অভিযুক্ত গোলাম কিবরিয়া।

প্রত্যক্ষদর্শী ঔষধ সেলসম্যান আবু সুফিয়ান জানান, ‘গোলাম কিবরিয়া ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাচ্ছিলেন। তখন বদরুল নামের একজন লোক তাকে আটক করে, আমাকে খবর দেয়। তার কাছে ইসিজি মেশিন, প্রিন্টার এবং কিছু ঔষধ পাওয়া যায়। লোকজন জড়ো হওয়ায় তাকে কৌশলে জিনিসপত্র রেখে চলে যেতে দেওয়া হয়। বিষয়টি আমি স্যারকে অবগত করি।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইয়াসিন আরাফাত জানান, ‘একদিনে তার এমন সাহস হয়নি, হয়তো তার এমন অভ্যাস দীর্ঘদিনের হতে পারে। কোন জিনিস নিতে নিতে যখন বড় হয়, তাই সে এমন সাহস পায়। এ ব্যাপারে কোন ভুল তথ্য যাতে না দিতে পারে এবং কোন গুঁজামিল না দিতে পারে এজন্য তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সে সরকারি স্টাফ নয়। তবে হাসপাতালের টিএলসিএ প্রজেক্টের দায়িত্বে ছিল সে। লোকবল না থাকায় তাকে স্টোরকিপারের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়। ঘটনাটি
সত্যি হলে তা জঘন্য অপরাধ, শাস্তি তাকে পেতেই হবে।’

তিনি বলেন- ‘তদন্তে তিনজনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, আমি নিজেও বিষয়টি দেখবো। তবে অভিযুক্ত গোলাম কিবরিয়াকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না।’