দিরাইয়ে বিদ্রোহী গ্রুপ যুবলীগ আয়োজিত জনসভা থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিরাই-শাল্লা থেকে প্রার্থিতা ঘোষণা দিয়েছেন সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ১০ম বারের মত আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করায় অভিনন্দন জানিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে স্থানীয় সাংসদ ড. জয়া সেনগুপ্তাবিরোধী দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের মোশাররফ ও যুবলীগের একাংশ রঞ্জন রায় অনুসারীদের জনসভায় তিনি এ ঘোষণা দেন।
শনিবার (২৮ জানুয়ারি) বেলা ৩টার দিকে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রঞ্জন রায়ের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তিনি।
এতে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকট।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মতিউর রহমান বলেন, সুসংগঠিত সাংগঠনিক কাঠামো দলকে শক্তিশালী রাখে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলকে শক্তিশালী করতে কিছু কিছু বিদ্রোহীকে ক্ষমা করার ঘোষণা দিয়েছেন।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে দিরাই-শাল্লা থেকে অংশগ্রহণের প্রত্যাশা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে ষাট দশক থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করে অদ্যাবদী আওয়ামী লীগ নিয়েই আছি। আমি এই এলাকারই সন্তান, আপনাদের সহযোগীতা পেলে আমি নির্বাচন করব এবং এমপি হলে গত ৫০ বছর দিরাই শাল্লার যে উন্নয়ন হয় নি, আমি তা করবো।’
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার উন্নয়নের সরকার। সারা দেশে আজ উন্নয়নের জোয়ার উঠেছে সে তুলনায় দিরাই শাল্লায় দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন হয়নি। সঠিক নেতৃত্ব গড়ে তুলে আমাদের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে হবে।
এ সময় উপজেলা যুবলীগ আয়োজিত বিদ্রোহী গ্রুপের বক্তারা আগামী জাতীয় নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মতিউর রহমানকে দিরাই শাল্লায় প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান বলে দাবি জানান তারা।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি রেজাউল করিম শামীম, এড. সোহেল আহমদ, মোশাররফ মিয়া, সাবেক শাল্লা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এড. অবনি মোহন দাস, শাল্লা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার মিয়া।
জেলা আওয়ামী লীগ সহ সভাপতি রেজাউল করিম শামীম, উপজেলা আওয়ামী সাবেক সহসভাপতি এড. সুহেল আহমেদ, দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোশাররফ মিয়া, জেলা আওয়ামী লীগ সহসভাপতি এড. অবনী মোহন দাস, জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য সৈয়দ আবুল কাশেম, জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী আবুল কালাম, শাল্লা উপজেলার সহসভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল সত্তার, তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অমল কর, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর চৌধুরী, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সদস্য সবুজ কান্তি দাস, সৈয়দ তানজিল আহমদ, আরিফুজ্জামান চৌধুরী এহিয়া, যুবলীগ নেতা ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোহন চৌধুরী, মকসুদ আলম, বদরুল ইসলাম চৌধুরী মিফতা, তাজুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিত রায় বিশু, সারোয়ার আহমেদ, রায়হান মিয়া, তাড়ল ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মহিত মিয়া, মুজিবুর রহমান, সুহেল চৌধুরী, হাইয়ূম মিয়া, মিজানুর রহমান, যুবলীগ নেতা কাইয়ূম মিয়া, চান মিয়া চৌধুরী, রফিনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আল মামুন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোশাররফ মিয়া ও বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী রঞ্জন রায়কে গত বছরের ১৪ নভেম্বর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে হামলা সংঘর্ষের ঘটনার অভিযোগে তাদের বহিষ্কারের ঘোষণা দেন সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান।
এদিকে যাকে নিজে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছিলেন তার জনসভায় উপস্থিত হয়ে প্রার্থীতা ঘোষণা নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে চলে নানা আলোচনা সমালোচনা।