১৮৮৫ সালে প্রণীত দখল স্বত্ব আইন অনুযায়ী, কোনো সম্পদ ১২ বছর পর্যন্ত নিজের দখলে রাখতে পারলেই সেই সম্পদের মালিকানা দাবি করা যায়। তবে শুধু দখলের ভিত্তিতে জমির মালিকানা লাভের বিধান আর থাকছে না। দখল স্বত্ব আইনটি সম্প্রতি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় আশা করছে, জাতীয় সংসদের আগামী শীতকালীন অধিবেশনেই আইনটি পাসের জন্য সংসদে তোলা সম্ভব হবে।
আইনটি পরিবর্তন হলে জমির মালিকানা নির্ধারণ হবে দলিলের ভিত্তিতে। অর্থাৎ যার নামে দলিল থাকবে তিনিই হবেন ওই ভূমির মালিক।
বিদ্যমান আইনের অজুহাতে প্রচুর সরকারি সম্পত্তি বেদখল হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। ব্যক্তিমালিকানার অনেক সম্পত্তি নিয়েও বিরোধ গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। এর বাইরেও জমির দখল নিয়ে সহিংসতার কারণে মামলা-মোকদ্দমা নৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
আইনটিতে পরিবর্তন এলে দেওয়ানি মামলার একটি বড় অংশই কমে আসবে বলে মনে করছে সরকার। নতুন আইনটির নাম রাখা হয়েছে ‘ভূমির ব্যবহার স্বত্ব গ্রহণ আইন, ২০২০’।
দেশে শুরু হওয়া ডিজিটাল সার্ভে সমাপ্ত হওয়ার পর এর সুফল মানুষ পাবে বলে মনে করছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। মেট্রোপলিটন বা সিটি এলাকাগুলোতেও এই সার্ভে করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোপলিটন এরিয়াতেও আমরা ডিজিটাল সার্ভে করছি। সিটি এলাকাগুলোতেও করা হচ্ছে। আমরা এটা করছি কারণ যাতে মানুষ ইচ্ছামতো যত্রতত্র কিছু করতে না পারে।
‘দলিল যার জায়গা তার। আমার দলিল নেই অথচ দখল করে আছি দীর্ঘদিন ধরে, এটা হতে পারে না। দখল স্বত্ব আইন আমরা সংশোধন করব। আইনটি আগামী শীতকালীন অধিবেশনে সংসদে নিয়ে আসতে আমরা চেষ্টা করছি। এ বছরের মধ্যেই এটা পাস করা আমাদের লক্ষ্য।’
মন্ত্রী বলেন, ‘সংশোধিত আইনে সাজার একটি বিধানও রাখা হচ্ছে। আর দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যে আমরা ডিজিটাল সার্ভে শেষ করতে পারব বলে আশা করছি।’
সারা দেশে ডিজিটাল সার্ভের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘এটা হচ্ছে ল্যান্ড ডিজিটাল সার্ভে। বরগুনা ও পটুয়াখালীতে কোনো সার্ভে হয়নি। এ জন্য আমরা এই এলাকাটা বেছে নিয়েছি। এখানে আগে সার্ভে না হওয়াটা আমাদের জন্য ব্লেসিংস। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, এখানেই প্রথম ডিজিটাল সার্ভেটা করব।’
তিনি বলেন, ‘এই সার্ভেটা হবে ড্রোনের মাধ্যমে। এর অ্যাকিউরেসি ক্লোস টু ১০০ পারসেন্ট। আমরা আগের ম্যাপ নিয়ে এটার সঙ্গে সিনক্রোনাইজ করব। সিএসএস-এ ঈ আছে এগুলো দেখব। এটার অ্যাকিউরেসি যখন পারফেক্ট হবে, যখন রোলআউট করব সারা দেশে, তখন এটা প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে আমরা উদ্বোধন করব।’
ভূমিমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, ডিজিটাল সার্ভে শেষ হলে জমির মালিকানা নিয়ে মামলাও কমে আসবে। আর এর জন্য বিশেষায়িত ড্রোন আনা হচ্ছে জার্মানি থেকে। আমরা এটা করছি হাইটেক ইকুইপমেন্ট নিয়ে। বেসরকারি খাতকে এই কাজে যুক্ত করছি, যাতে অ্যাকিউরেট হয়।
‘আমি বারবারই বলছি, এই সার্ভের পর আর কোনো সার্ভে করার প্রয়োজন পড়বে না। এটাই হবে বেস লাইন।’
সূত্র : নিউজবাংলা