সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে। ১৯৭১ সালের এইদিনে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে পাক বাহিনী পিছু হটে এবং শত্রুমুক্ত হয় তাহিরপুর।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) দিবসটি উপলক্ষে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আয়োজনে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুরুতে সকাল ৯টায় রাজাকারদের প্রতিকী ফাঁসির মধ্য দিয়ে একটি র্যালি এবং শেষে এক আলোচনা সভা করা হয়।
সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমার সভাপতিত্বে ও মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস শহিদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডের সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নুরুল মোমেন, তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল, আওয়ামীলীগ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন খাঁন, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রফিকুল ইসলাম, রৌজ আলী, থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, আওয়ামীলীগ কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান খেলু, বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ওয়াহীদ খসরু ও বিল্লাল আহমদ প্রমূখ।
জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় তাহিরপুর উপজেলা টেকেরঘাট সাব সেক্টরের অধীনে একটি শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। এখানে সাবেক রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এর সাব কমান্ডার ছিলেন প্রথম দিকে সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত এবং পরে মেজর মোসলেম উদ্দিন এবং তাঁর নেতৃত্বে এ অঞ্চলের বাঙালি মুক্তিকামী ছেলেরা পাক বাহিনীর উপর আক্রমণ করে। বাঙালি দামাল ছেলেদের কৌশলী আক্রমণের মুখে এক পর্যায়ে পাক বাহিনী পিছু হটে এবং তাহিরপুর ছেড়ে পালিয়ে যায়। এভাবেই শত্রুমুক্ত হয় তাহিরপুর।
মুক্তিযোদ্ধের সময় এ অঞ্চলে প্রথম শাহাদাৎ বরণ করেন বীর প্রতীক শহীদ সিরাজুল ইসলাম। টেকেরঘাটে তাঁর সমাধি রয়েছে। তাছাড়া বীর প্রতীক শহীদ সিরাজুল ইসলামসহ নাম না জানা অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে টেকেরঘাটে সমাহিত করা হয়েছে। তাঁদের স্মৃতি রক্ষায় টেকেরঘাটে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে।