ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে। নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে তাকে যৌন হয়রানি করেছেন বলে ওই ছাত্রী নিজে অভিযোগ করেছেন।
ঘটনাটি ৯ সেপ্টেম্বর ঘটলেও এটির সুষ্ঠু তদন্ত করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই ছাত্রী।
অভিযোগ দিতে দেরি হওয়ার কারণ সম্পর্কে ছাত্রী বলেন, ঘটনার পর মানসিক ট্রমা থেকে বের হতে না পেরে আমি গ্রামের বাড়ি চলে যাই। তাই লিখিত অভিযোগ দিতে দেরি হয়েছে।
লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর উপাচার্য কী জানিয়েছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্যার আমাকে বলেছেন তদন্ত কমিটি গঠন হলে আমি কথা বলতে পারব কি না। আমি, হ্যাঁ বলেছি। এর পর আমি সেটা জমা দিয়ে চলে আসি।’
লিখিত অভিযোগে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, ‘গত ১১ সেপ্টেম্বর আবাসিক হলের বিষয়ে পরামর্শ নেয়ার জন্য ইনস্টিটিউটের অফিস কক্ষে অন্য একজন শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করতে গেলে সেই শিক্ষক সেখানে না থাকায় আমি অফিস কক্ষের বাইরে দাঁড়াই।
‘ওই সময় সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক আমার কাছে জানতে চান, আমি কেন এখানে দাঁড়িয়ে আছি। আমি আমার সমস্যার কথা জানালে তিনি আমাকে তার কক্ষে ডেকে নেন। তখন আমি স্যারের কক্ষে যাই। স্যার আমাকে প্রয়োজনীয় দুই একটা কথা বলার পরপরই অপ্রাসঙ্গিক কথা বলতে শুরু করেন।’
লিখিত অভিযোগে ছাত্রী আরও উল্লেখ করেন, ‘তিনি আমাকে নানান রকমের সাহায্য করার কথা বলেন এবং আমাকে বলতে থাকেন আমি যেন একা তার সঙ্গে দেখা করি এবং বই নেই তার কাছে গিয়ে।
‘তা ছাড়া তার বিষয়ে বা তার সাহায্যের বিষয়ে যেন কাউকে কোনো কথা না বলি। এর পর তিনি আমার সেল ফোন নম্বার নেন এবং এক রকম জোর করেই আমার মেসেঞ্জারে নক করেন।’
অভিযোগপত্রে ছাত্রী উল্লেখ করেন, ‘তার কথার ধরণ এবং অঙ্গভঙ্গি আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হলে আমি উঠে দাঁড়াই। তখন তিনি নিজেও তার নিজ আসন ছেড়ে আমার কাছে উঠে আসেন এবং আমাকে যৌন হয়রানি করেন।
তিনি বারবার বলতে থাকেন, তোমাকে আমার ভালো লেগেছে। তিনি আমার শরীরের আপত্তিকর স্থানে স্পর্শ করেন। আমি ভয়ে তার কক্ষ থেকে দৌড়ে পালিয়ে যাই।’
ছাত্রী জানান, ঘটনার সময় সিনিয়র কিছু শিক্ষার্থী তাকে রুম থেকে বের হয়ে যেতে দেখেন। এর পর তিনি ভয়ে আর মেসে ফিরে যাননি।
তিনি বলেন, ‘এর পর আমি ইনিস্টিটিউটের ক্যান্টিনে কিছু সময় অবস্থান করি। তখন ওই শিক্ষক আমাকে ফোন করে তার সঙ্গে দুপুরের খাবার অথবা হালকা নাস্তা বা চা খাওয়ার প্রস্তাব জানান। তখনও আমাকে বারবার এই বিষয়ে যেন কাউকে না জানাই, তা সাবধান করতে থাকেন।’
এ বিষয়ে সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. গোলাম আজম এবং ওই অধ্যাপকের ফোনে সংযোগ না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।
ছাত্রীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন কি না জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল বলেন, ‘পেয়েছি কি পাইনি সেটা আগামী সিন্ডিকেট মিটিংয়ে দেখা যাবে।’