জ্বালানি তেল বিশেষ করে ডিজেলের দাম বাড়ায় বড় ধরণের ক্ষতির মুখে পড়েছে জগন্নাথপুরের কৃষকেরা। এতে ব্যাহত হতে পারে আমন ধানের উৎপাদন। কৃষকেরা নতুন করে লোকসানের মুখোমুখি হওয়া মানে ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা’।
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পুরো কৃষি এখন জ্বালানী তেল নির্ভর। আগের দিনে গরু দিয়ে হালচাষ করলেও তা পাল্টেছে এখন। গরুর বদলে এসেছে প্রযুক্তি। প্রযুক্তির উৎকর্ষের কারণে এবং কৃষকদের সুবিধার্থে কৃষিকাজে ডিজেলচালিত পাওয়ার ট্রিলার ও সেচ পাম্প এবং মাড়াইয়ের যন্ত্র ব্যবহার করা হয়।
এমন বাস্তবতায় ডিজেলের দাম বাড়ায় কৃষকদের মাথায় হাত পড়েছে। তারা এখন বুঝে উঠতে পারছেন না আমন ধান কিভাবে চাষ করবেন। হয়তো শেষ পর্যন্ত তাদের চাষ বন্ধ রাখতে হবে। নয়তো নতুন করে লোকসান আর ঋণের ফাঁদে পড়তে হবে তাদের।
উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানায়, এবার আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার ৪শত ৬৫ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ১১ হাজার ৩৫ হেক্টর। এবার নতুন করে বিনা ২২,২৪, বিধান ৮৭,৭৫ বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলার ৩০০ জন কৃষকের মধ্যে বিজ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। আবহাওয়া জন্য ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক রাখতে স্বল্পমেয়াদী ধানের চারা প্রদান করা হয়েছে।
উপজেলার কৃষক মনজুর আহমদ, এখলাছুর রহমানসহ আরো অনেকে জানান, বীজতলা তৈরি ও পরবর্তীতে চারা রোপণের জন্য পাওয়ার টিলারের মাধ্যমে চাষ দিতে হয়। ডিজেলের দাম বাড়ায় পাওয়ার টিলারের খরচ বেড়ে যাবে। ধান কাটা ও মাড়াইয়ে যন্ত্র ব্যবহার হলে সেখানেও ডিজেল ব্যবহার রয়েছে। চারা রোপণ, আগাছা পরিষ্কারসহ নানা কাজে প্রয়োজনীয় শ্রমিকদের মজুরিও বাড়বে।
তারা বলেন, পরিবহন খরচ বাড়ায় কীটনাশক ও বালাইনাশকের খরচ বাড়বে। চলতি আমন মৌসুম থেকেই এ বাড়তি বোঝা টানতে হবে তাদের।
উপজেলা কৃষি কর্মকতা মোহাম্মদ শওকত ওসমান মজুমদার জানান, ‘এবারের বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলি জমি। এ বিষয়ে আমরা লক্ষ্য রেখে কাজ করে যাচ্ছি। এবার নতুন করে বিনা ২২,২৪, বিধান ৮৭,৭৫ বিতরণ করা হয়েছে। আমরা এই প্রথম উপজেলার ৩০০ জন কৃষকের মধ্যে বীজ সহায়তা প্রদান করেছি। আবহাওয়া জন্য ধান উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ঠিক রাখতে স্বল্প মেয়াদের উৎপাদনের ধান বিতরণ করেছি। আশা করি প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে ও ভাল ফলন হবে।’