বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সঙ্গে যৌথভাবে গবেষণা করার উদ্যোগ নিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। এজন্য হাইড্রোকার্বন ইউনিট বুয়েটের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই করতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে যৌথভাবে কাজ করার জন্য সমঝোতা স্মারকটি জ্বালানি বিভাগে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
দেশীয় গবেষকদের কাজে লাগানোর তাগিদ ছিল দীর্ঘদিনের। এখন সেই দাবিই সরকার পূরণ করতে যাচ্ছে। এতে করে একদিকে যেমন অভিজ্ঞদের কাজে লাগানো যাবে তেমনি নতুনরাও শেখার সুযোগ পাবে যা ভবিষ্যতকে সমৃদ্ধ করবে।
জ্বালানি বিভাগের সবশেষ সমন্বয় সভায় বুয়েটের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করার বিষয়ে তাগিদ দেন জ্বালানি বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
হাইড্রোকার্বন ইউনিটের একজন কর্মকর্তা বলেন, আমরা সমঝোতা স্মারকটি এরমধ্যে তৈরি করে জ্বালানি বিভাগে পাঠিয়েছি। জ্বালানি বিভাগ থেকে কিছু কারেকশন দেওয়া হয়েছে। সেগুলো ঠিক করে আমরা বুয়েটের কাছে পাঠিয়েছি, এখন বুয়েট সম্মত হলেই আমরা সই করতে পারবো।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র বলছে, জ্বালানি বিভাগের সব গবেষণা এবং পরামর্শ দেশের বাইরে থেকেই গ্রহণ করা হয়। দেশে কেউ এ ধরনের অভিজ্ঞ না থাকাতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে এগুলো করা হয়।
জ্বালানি বিভাগে তেল গ্যাস অনুসন্ধান ছাড়াও তেল গ্যাস পরিবহনের মতো বিষয় রয়েছে। কীভাবে এসব বিষয়কে আরও সাশ্রয়ী করা যায় সেই চিন্তা অনেক দিন থেকে করা হচ্ছে। কিন্তু বেশিরভাগ কাজই বিদেশি প্রতিষ্ঠান করাতে সাশ্রয়ী হচ্ছে না।
হাইড্রোকার্বন ইউনিট সূত্র বলছে, বুয়েট যেখানে যেখানে গবেষণায় সহায়তা করতে পারে তা আগে চিহ্নিত করা হবে। এরপর তাদের সঙ্গে সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হবে। গবেষণায় যেমন জ্বালানি বিভাগের প্রতিষ্ঠান থাকবে সেই রকম বুয়েটের প্রকৌশলীরাও থাকবেন। এর মাধ্যমে নলেজ শেয়ারিংয়ের সুযোগ থাকবে। প্রয়োজনে উভয়ের মধ্য থেকে অধিকতর যোগ্যদের দেশের বাইরে ট্রেনিং দিয়ে এনে অন্যদের ট্রেনিং দেওয়া হবে।
সূত্র বলছে, গবেষণার বিষয় বুয়েট এবং হাইড্রোকার্বন ইউনিট যৌথভাবে ঠিক করবে। এক্ষেত্রে সময়োপযোগিতা চিহ্নিত করে বিষয় নির্বাচন করা হবে।
এর আগে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ সালেক সুফি এক সেমিনারে বলেছিলেন, শুধু দেশে নয় দেশের বাইরেও এমন অনেকে রয়েছে যাদের সরকার চাইলেই কাজে লাগাতে পারেন। এটি সরকারের স্বদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে। তিনি বলেন, আমরা যারা দেশের বাইরে রয়েছি, দীর্ঘদিন জ্বালানি খাতে কাজ করেছি। আমরা এখনও দেশের জন্য কাজ করতে চাই।
জ্বালানি বিভাগের কোম্পানিগুলো মূলত পেট্রোবাংলা এবং বিপিসির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। হাইড্রোকার্বন ইউনিট জ্বালানি খাতের নীতি এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান। মূলত তারা গবেষণার ক্ষেত্রে নিজেরা তথ্য সংগ্রহের চাইতে সেকেন্ডারি ডাটাকেই বেশি প্রাধান্য দেয়। এবার বুয়েটের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হলে দেশীয় গবেষকদের কাজে লাগানোর দরজা খুলবে। পরবর্তীতে জ্বালানি খাতের অন্য কোম্পানিগুলো একইভাবে এগিয়ে আসলে গবেষণার বিষয়টি আরও ত্বরান্বিত হবে।