ভাষা সৈনিক, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতীয় নেতা আব্দুস সামাদ আজাদের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ শনিবার (২৭ এপ্রিল)।
দিবসটি উপলক্ষে আব্দুস সামাদ আজাদ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে সকাল ৯ টায় রাজধানীর বনানী কবরস্থানে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হবে।
এছাড়াও বিকালে রাজধানীর কলাবাগান লেকভিউ জামে মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া সুনামগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ দিবসটি উপলক্ষে স্মরণসভা ও মিলাদ মাহফিল আয়োজন করেছে।
আব্দুস সামাদ আজাদ ১৯২২ সালের ১৫ জানুয়ারি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার ভুরাখালি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
১৯৪০ সালে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র থাকা অবস্থায় সুনামগঞ্জ মহকুমা মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি হিসেবে রাজনীতিতে পদাপর্ণ করেন।
তিনি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন ও আসাম অঞ্চলের বিভিন্ন আঞ্চলিক বিষয়কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা বিভিন্ন সংগ্রামের অগ্রনায়ক ছিলেন। এ কারণে ইংরেজ শাসক কর্তৃক কয়েকবার গ্রেপ্তারও হন।
সংগ্রামের সিঁড়ি বেয়ে গ্রাম থেকে উঠে আসা সামাদ আজাদ ভাষা আন্দোলনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে কারাবরণ করেন।
১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে রাজনীতিতে সামনের কাতারে চলে আসেন তিনি।
১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা, উনসত্তুরের গণঅভ্যুত্থানসহ সব আন্দোলনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭০ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন সামাদ আজাদ।
১৯৭১ সালে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠার পেছনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন এবং প্রবাসী বিপ্লবী মুজিবনগর সরকারের রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও ভ্রাম্যমাণ রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে সামাদ আজাদ স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সুনামগঞ্জ-২ ও ৩ আসনে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হন।
১৯৯১ সালে সুনামগঞ্জ-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে সংসদে বিরোধী দলীয় উপনেতার দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে নির্বাচিত হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আব্দুস সামাদ আজাদ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে বহির্বিশ্বে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করেন।
২০০১ সালের নির্বাচনে দল হারলেও তিনি সুনামগঞ্জ-৩ আসনে বিজয়ী হন। সামাদ আজাদ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য থাকা অবস্থায় ২০০৫ সালের ২৭ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন।