অবৈধভাবে ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলের অন্তর্ভুক্তকরণ এবং অবিলম্বে তা ইউক্রেনের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আনা এক প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবারের (১৩ অক্টোবর) জাতিসংঘের সনদ, জাতিসংঘ চার্টার, একটি রাষ্ট্রের ভৌগোলিক অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্বসহ অন্যান্য মৌলিক নীতির পরিপ্রেক্ষিতে ওই ভোটাভুটিতে বাংলাদেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে আনা নিন্দা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ১১তম জরুরি বিশেষ অধিবেশনে প্রস্তাবের পক্ষে ১৪৩টি দেশ ভোট দেয়। প্রস্তাবের বিপক্ষে ৫টি দেশ এবং ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে ৩৫টি দেশ।
প্রস্তাবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ভোটদানে বিরত থাকে। বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলের বাকি পাঁচটি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়।
প্রস্তাবটি বিপুল ভোটে গৃহীত হওয়ার মধ্য দিয়ে ইউক্রেনের ভূখণ্ড দখলে রাশিয়ার অপপ্রয়াসের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক বিরোধিতার জোরালো বার্তা প্রতিফলিত হয়েছে।
জাতিসংঘে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ার বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মাদ আবদুল মুহিত বলেন, যেকোনো দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে দ্বন্দ্ব নিরসন করতে জাতিসংঘ সনদে যা বলা হয়েছে, তা কোনো ব্যত্যয় ছাড়াই সব সময় মেনে চলতে হবে— এটি বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে।’
মোহাম্মাদ আবদুল মুহিত বলেন, ‘বাংলাদেশ মনে করে, যেকোনো দেশের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা রাখা উচিত। ইউক্রেনের ভূখণ্ডের ক্ষেত্রে বিশ্ব যে অবস্থান নিয়েছে, সেই প্রেক্ষাপটে বলতে চাই যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় প্যালেস্টাইন এবং অন্যান্য আরব ভূখণ্ড দখলের ক্ষেত্রে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একই অবস্থান নেবে।’
ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল দোনেৎস্ক, খেরসন, লুহানস্ক ও জাপোরিঝঝিয়াকে রাশিয়ার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য মস্কো গণভোটের আয়োজন করে। পরে ইউক্রেনের ওই চার অঞ্চলকে রাশিয়া অন্তর্ভুক্ত করে নেয়। রাশিয়ার এ সিদ্ধান্তের পর জাতিসংঘে ৭ অক্টোবর প্রস্তাবটি করা হয়। ৫০টির বেশি দেশ প্রস্তাবে সমর্থন জানায়। ১০ অক্টোবর আলোচনা শুরু হয় এবং আলোচনার শুরুতে রাশিয়া প্রস্তাবটি গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোটাভুটি করার প্রস্তাব করলে সেটির বিপক্ষে ১০৭টি ভোট পড়ে এবং প্রস্তাবটি বাতিল হয়ে যায়।