জনগণের ক্ষমতা দ্রুততম সময়ে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেন: ডা. জাহিদ হোসেন

সিলেটে সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের সভায় বক্তব্য রাখেন ডা. জাহিদ হোসেন

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের আহ্বায়ক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ‘জনগনের ক্ষমতা জনগনের হাতে দ্রুততম সময়ে ফিরিয়ে দিন। সেটা প্রলম্বিত করলে মহাসংকটের মধ্যে পড়বেন। জনগনের চোখের ভাষা বুঝতে হবে। জনগন কী চায়, তা না বুঝে চললে হবে না। জনগণের বিষয়টি মাথায় নিয়েই এগুতে হবে।’

শুক্রবার (১ নভেম্বর) সিলেটে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদ সিলেটের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, `রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য এখন সংস্কার কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু বিএনপি ২০২২ ও ২০২৩ সালে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ৩১ দফা ঘোষণা করেছে। আপনারা এখন যা চিন্তা করছেন, বিএনপি তা আরও আগে পরিকল্পনা করে বসেছে।‘

তিনি বলেন, `সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিবে জনগন। জনগন জানে কী সংস্কার করতে হবে। তাই জনগনের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়ে জনগণের সিদ্ধান্তকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এজন্যই দ্রুততম সময়ের মধ্যে জনগনের নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।‘

তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি আপনাদেরকে সহযোগীতা করবো। কিন্তু অনির্দিষ্টকালের জন্য নয়। কোনো অজুহাতে কোনো প্রক্রিয়াকে প্রলম্বিত করার চেষ্টা করা হলে জনগণ তা সহ্য করবে না। ‘

৭ নভেম্বরকে যারা বিশ্বাস করে না তারা বাংলাদেশকে বিশ্বাস করে না উল্লেখ করে ডা. জাহিদ হোসেন  বলেন, `বাংলাদেশের ইতিহাসে জাতীয় ঐক্যের কোনো দিন থাকলে সেটি হচ্ছে ৭ নভেম্বর। এই দিনে সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের নির্দেশে পুরো জাতি এক হয়েছিল। এজন্য এই দিবসটি আমাদের স্বাধীনতা-স্বার্বভৌমত্বের সঙ্গে জড়িত। এটাকে কোনোভাবেই অবহেলা করা যাবে না।‘

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার খাতা থেকে ৭ নভেম্বরকে মুছে দিলেও সেটি আমাদের হৃদয়ে গেঁথে রয়েছে। ৭ নভেম্বর বিএনপির কোনো কথা নয়, এটি জিয়াউর রহমানের কথা। এই দিনটিকে কেবল আনুষ্ঠানিকতা মধ্যে রাখলে চলবে না। এটাকে অনুধাবন করে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এর ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে।

মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্পের বাংলাদেশ নিয়ে মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আপনি বাংলাদেশ নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। আপনার ৫ নভেম্বর নির্বাচন নিয়ে চিন্তা করেন। বাংলাদেশের মানুষ বাংলাদেশ নিয়ে চিন্তা করবে। বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলে হিন্দু কিছু ভোট ট্রাম্প নিজের বাক্সে নেওয়ার পরিকল্পনা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সরকারের পালিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশের মানুষ না চাইলে গুলি করেও ক্ষমতায় ঠিকে থাকা যায় না। যদি মানুষের ভালোবাসা না থাকে, তাহলে এভাবেই পালিয়ে যেতে হয়।

তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে গায়েবি ও মিথ্যা মামলা দিয়ে শেখ হাসিনা নির্যাতন করতে করতে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু খালেদা জিয়া মরেননি। তিনি এখনও স্বগৌরবে বেঁচে আছেন। অথচ আজ আপনিই (শেখ হাসিনা) নেই।

তিনি বলেন, বিএনপি পালায় না। ১/১১’র সময়েও বিএনপি পালিয়ে যায়নি। কিন্তু আওয়ামী লীগ পালায়। যেটা ৫ আগস্ট করে দেখিয়েছেন। লক্ষন সেনের পর দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে শেখ হাসিনা পালিয়ে আরেক ইতিহাস তৈরি করেছেন।

বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের সিলেট জেলার আহ্বায়কডা. শামীমুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ডা. শাহনেওয়াজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্ঠা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি মিফতা সিদ্দিকী, জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) সভাপতি ডা. নাজমুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীম। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।