সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ব্যবসায়ী আনন্দ সরকার (২৪) হত্যাকাণ্ডের রহস্য গত তিন বছরেও উন্মোচিত হয়নি। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
২০১৯ সালের এই দিনে (৫ ডিসেম্বর) ওই তরুণ ব্যবসায়ীর গলাকাটা লাশ তালাবদ্ধ দোকানঘর থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিন বছর শেষেও এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন নিহতের স্বজনরা।
নিহতের স্বজনরা জানান, ২০১৯ সালের ৫ ডিসেম্বর জগন্নাথপুর পৌর এলাকার সিএ মার্কেট এলাকায় কামাল কমিউনিটি সেন্টারের পাশে আনন্দ সরকারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ভেতর থেকে তার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর পর আনন্দ সরকারের ভাই জীবন সরকার বাদী হয়ে জগন্নাথপুর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে তার মা বাদী হয়ে আদালতে এ ঘটনায় পৃথক আরেকটি অভিযোগ দাখিল করেন। পুলিশের অপরাধ দমন বিভাগ সিআইডি মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব নেয়
আনন্দ সরকার নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার বটতলা গ্রামের সুনিল সরকারের ছেলে। ২০১৭ সালে কাজের খোঁজে জগন্নাথপুরে এসে নন্দিতা স্টুডিওতে দেড় বছর কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন। পরে নিজে স্টুডিও ব্যবসা শুরু করেন। রাতে দোকানের ভেতরেই রাত্রিযাপন করতেন আনন্দ। ঘটনার কয়েকদিন আগে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) থেকে টাকা তুলে ক্যামেরা ক্রয় করেন আনন্দ।
এরপর তালাবদ্ধ দোকানের ভেতর থেকে তার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। উপজেলা সদরে এমন নৃশংস হত্যার ঘটনা নাড়িয়ে দেয় উপজেলাবাসীকে। কেন এ হত্যাকাণ্ড, কারা এ নির্মম খুনের ঘটনায় জড়িত- এসব নানা প্রশ্ন মানুষের মনে উঁকি দিলেও হত্যার রহস্য যেন হিমঘরে আটকা পড়ে আছে।
নিহত আনন্দ সরকারের ভাই জীবন সরকার বলেন, দীর্ঘ তিন বছর অতিবাহিত হলেও আমার ভাই হত্যার কোনো ক্লু উদঘাটন ও ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে না পারায় আমরা হতাশ। আমরা দ্রুত এ হত্যাকাণ্ডের মূল আসামিকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, পুলিশের অপরাধ দমন বিভাগ সিআইডির পরিদর্শক লিটন দেওয়ান বলেন, আনন্দ সরকার হত্যা মামলাটি কিছুদিন আগে আমার কাছে তদন্তের জন্য এসেছে। এ হত্যাকাণ্ডের মামলার আসামি শনাক্ত করা যায়নি। আমি ঘটনার ক্লু উদঘাটন ও প্রকৃত আসামি শনাক্ত করে অভিযোগপত্র দিতে কাজ করছি।
তিনি বলেন, আনন্দ হত্যার ঘটনায় তার মা ও ভাই বাদী হয়ে দুটি মামলা দায়ের করেন। দুটি অভিযোগ বিবেচনায় নিয়ে আমরা তদন্ত করছি।