সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে চলছে অসহনীয় বিদ্যুৎ বিভ্রাট। এতে জনজীবন অনেকটাই বিপর্যস্ত হওয়য়ার পাশাপাশি জনমনেও মিলছে না স্বস্তি। ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিংয়ের ফলে ব্যবসা-বানিজ্যে পড়েছে ভাটা।
একদিকে অসহনীয় বিদ্যুৎ বিভ্রাট, অন্যদিকে প্রচণ্ড তাপদাহে দুর্ভোগে পড়েছেন জনসাধারণ। মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের ফলে ক্ষোভ বিরাজ করছে উপজেলাবাসীর মাঝে। গত কয়েক দিনে বিদ্যুতের এমন ভেলকিবাজির কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে বইছে নিন্দার ঝড়। বিদুৎ বৈষম্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়ও বইছে জনমনে।
জগন্নাথপুর উপজেলা বিদুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে প্রতিদিন গড়ে ৯ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন রয়েছে। এরমধ্যে মাত্র ৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছে জগন্নাথপুর। বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকের চেয়ে কমিয়ে আনায় ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে প্রতি এক ঘন্টা পর বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করতে হয় বলেও জানায় কর্তৃপক্ষ।
কর্তৃপক্ষ আরও জানান, আমদানি করা বিদ্যুৎ ও গ্যাসভিত্তিক কিছু প্ল্যান্টগুলোতে গ্যাস সংকটে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। মূলত এসব কারণেই বিদ্যুৎ সরবরাহে বাঁধার সৃষ্টি হচ্ছে।
এদিকে, অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে মোবাইলে ইন্টারনেট সেবাও ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে রবি ও এয়ালটেল সিম কোম্পানীগুলোর নেটওয়ার্ক সেবা বেশি ব্যহত হচ্ছে । বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে অপারেটররা ২-৩ ঘণ্টা পর্যন্ত জেনারেটরের মাধ্যমে নেটওয়ার্ককে সচল রাখতে পারলেও, অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিভ্ররাট চলতে থাকলে নেটওয়ার্ক সাইটে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এতে করেও সাধারণ জনমনে দেখা দেয় চরম ভোগান্তি।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অতিষ্ঠ জগন্নাথপুর বাজার ব্যবসায়ী সুজন আহমদ শুভ বলেন, ‘প্রচণ্ড গরম আর বিদ্যুতের ভেলকিবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে ক্রেতারা বাজারে আসছেন না। এতে করে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মত বিদুৎতের উপর নির্ভরশীল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিগ্রস্তের শঙ্কা বেড়েই চলেছে।’
অন্য আরেক ব্যবসায়ী মো. ওয়ালি উল্লাহ বলেন, ‘লোডশেডিংয়ের কারণে ফ্রিজে থাকা জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পানি তোলা যাচ্ছে না। অচল হয়ে পড়েছে ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ। প্রচণ্ড তাপদাহের সঙ্গে বিদ্যুতের অত্যাচারে শিশু ও বয়স্ক মানুষজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।’
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের বিষয়ে জগন্নাথপুর উপজেলার আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) আজিজুল ইসলাম আজাদ বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, ভারত থেকে যে পরমাণ বিদুৎ আমদানি হত এগুলো বিভিন্নভাবে বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে তীব্র গরমে বিদুৎতের চাহিদা বেড়েই চলেছে। আমাদের ৬টি পিলার রয়েছে এদের মধ্যে ৩টায় ১ ঘন্টা দেই, অন্য ৩টায় ১ ঘন্টা করে এভাবে সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ চলে। রাতের দিকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অফিস বন্ধ থাকায় মোটামুটি সার্ভিস দিতে পারি। আমরা উপরে যোগাযোগ করেছি। মুলত ঢাকা থেকে লোড আসে। শহরের তুলনা আমরা এখানে বিদুৎ কম পাই। আগামী ১১ তারিখ একটি মিটিং আছে সেখানে লোডকে আবার আগের যায়গাত নিয়ে যাওয়ার আলোচনা করা হবে।’