কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সরগরম হয়ে উঠেছে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের কামার দোকানগুলো। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত টুং-টাং শব্দে মুখরিত কামার পল্লীর চারপাশ। দা, বঁটি, ছুরিসহ গৃহস্থালি নানা সরঞ্জাম বানাতে ব্যস্ত সময় পার করছে এখানকার কর্মকাররা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে- আগের তুলনায় কর্মকারদের কাজ বেড়েছে অনেকগুণ।বেচাকেনাও চলছে পুরোদমে। ক্রেতাদের অনেকে আবার নিজস্ব ধাতব পদার্থ নিয়ে আসছেন দা-বটি তৈরি করতে। কেউবা নুতন দা-বটি কিনে নিচ্ছেন। দেখে মনে হবে, কর্মকাররা হয়তো এ সময়টার জন্যই বছর জুড়ে অপেক্ষা করেন।
কামারিরা বলছেন, ঈদ আসায় তাদের ব্যস্ততা বহুগুণ বেড়ে গেছে। আগে সকাল দশটায় দোকান খোলা হত। আর সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসতেই বন্ধ থাকতো। তবে ঈদ মৌসুমটা ব্যতিক্রম। এ সময়টাতে সকাল আটটা থেকেই তাদের কর্মযজ্ঞ শুরু হয়। চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। এমনকি ঈদের আগের রাতেও তারা সারারাত পর্যন্ত জেগে কাজ করতে হয়। তাই এ সময়ে মোটাদাগে ইনকাম কমবেশি সবারই হয়।
তারা আরো জানান, আগে প্রতি বস্তা কয়লা একশ টাকা হলে কেনা যেত। কিন্তু বর্তমানে এক বস্তা কয়লা কিনতে গুণতে হচ্ছে তিন হাজার টাকা। যে কারনে মজুরি কিছুটা বেড়েছে। তবে ঈদ মৌসুমকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত মজুরি চাওয়া হচ্ছে না। কাজ অনুযায়ী আগের মতোই মজুরি নেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া কোরবানি ঈদের আগ মুহুর্তে দা-বটির কেনাবেচা বাড়লেও নানা আকারের ছুরি, ধামা, রামদা ইত্যাদির চাহিদা বেড়ে যায়। বছরের অন্য সময়ে এসব ছুরি, ধামা, রামদা বিক্রি না হওয়ায় এ সময়টাতে অল্প দামেই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।
মনা দেব কর্মকার জানান, প্রতিটি ছোট-বড় ছুরি ধারালো করার কাজে কামাররা মজুরি নিচ্ছেন ত্রিশ থেকে পঞ্চাশ টাকা। কেউ আবার পঞ্চাশ থেকে একশ টাকা করেও নিচ্ছেন। আর একটি বটি ক্রেতাদের কাছে তিনশ থেকে পাঁচশ টাকায় বেচা হচ্ছে। বড় ছুরির দাম নেওয়া হচ্ছে ছয়শ থেকে সাতশ টাকা।
সিলেট ভয়েস/এএইচএম