২০২২ সনের ৫ জানুয়ারি জকিগঞ্জের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সীল দেয়া ব্যালট পেপার, নগদ টাকা, ফেনসিডিল বোতলসহ দুই রিটার্নিং কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হওয়াকে কেন্দ্র করে জকিগঞ্জ থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা রেকর্ড করে। যে কারণে উপজেলার কাজলসার ও সুলতানপুর ইউনিয়নের নির্বাচন বাতিল করা হয়েছিল।
সেই মামলার অভিযোগ সাক্ষী প্রমাণে প্রমাণিত হয়নি মর্মে বুধবার দুই কর্মকর্তাকে নির্দোষ হিসাবে অব্যাহতি দিয়ে রায় প্রদান করেছেন জকিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শ্যামকান্ত সিনহা।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন ও অ্যাডভোকেট কাওছার রশিদ বাহার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সিএসআই বাহার উদ্দিন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন নির্বাচন চলাকালীন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (সিলেটের জেলা প্রশাসক) এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. ফরিদ উদ্দিন আহমদ, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শুকুর মাহমুদ মিয়ার উপস্থিতিতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুল হকের সরকারি গাড়ী তল্লাশী করে কয়েকটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচনী প্রতিকে সীল দেয়া ৪শত ব্যালট পেপার, সীল ছাড়া ৪শত ব্যালট পেপার, মুড়ি বই ৪টিসহ নির্বাচনী সরঞ্জামাদি, নগদ ১লক্ষ ২১ হাজার ৫০০ টাকা ও ১ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে। একইসাথে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসাবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাদমান সাকিব ও কৃষি কর্মকর্তা আরিফুর রহমানকে আটক করে পুলিশ।
পরে নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা জৈন্তাপুর মডেল থানার এএসআই মো. আব্দুল হাকিম বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করলে জকিগঞ্জ থানায় ০২ নং মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। নজিরবিহীন এ ঘটনায় সারাদেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এর কয়েকদিন পর জকিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত হতে দুই আসামি জামিনে মুক্তি পেলেও নির্বাচন কমিশন দু’জনকে সাময়িকভাবে চাকরীচ্যুত করে। একই বছরের ১৫ জুন দুটি ইউনিয়নেই পুনর্নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
পরবর্তী ১২ নভেম্বর জকিগঞ্জ থানা পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত সম্পন্ন করে তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ইন্সপেক্টর উজায়ের আল মাহমুদ আদনান আদালতে চার্জশিট প্রদান করেন।
এই মামলায় সিলেটের তৎকালীন পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন আহমেদ পিপিএম ও সিলেটের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শাকুর মাহমুদসহ ১৭জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষী প্রদান করেন।