জকিগঞ্জে প্রতিমা নিরঞ্জনে ভক্তদের মিলনমেলা

প্রতি বছরের মতো এবারও সিলেটের জকিগঞ্জের কাস্টমস ঘাটে বুধবার (৫ অক্টোবর) প্রতিমা নিরঞ্জনে বাংলাদেশ ও ভারতের হাজার হাজার মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়। কুশিয়ারার ওপারে ভারতের করিমগঞ্জ জেলা শহর ও বাংলাদেশের জকিগঞ্জ উপজেলার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা চোখের জলে দুর্গতিনাশিনী মা দেবী দুর্গাকে বিদায় জানিয়েছেন।

বিভিন্ন পূজামণ্ডপ থেকে শোভাযাত্রাসহ জকিগঞ্জ কাস্টমসঘাটে প্রতিমা বিসর্জন করেন ভক্তরা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এ উৎসবকে ঘিরে মেতে ওঠে সীমান্তঘেঁষা কুশিয়ারাপাড়ের নানা ধর্ম-বর্ণের হাজারো মানুষ। ঢাক-ঢোল, কাঁসর, করতাল, মন্দিরা, বাঁশি এবং শঙ্খ ধ্বনিতে মুখরিত হয় গোটা এলাকা।

দেবী দুর্গার বিদায়কে কেন্দ্র করে সীমান্ত এলাকা জকিগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর ভারত ও বাংলার দুই তীরে বসেছিল মানুষের মিলনমেলা। জড়ো হন হাজারও পূজারী ভক্ত অনুরাগী, দর্শনার্থী ও শুভার্থীরা। হিন্দু, মুসলিমের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে জকিগঞ্জ শহরের কাস্টমঘাট ও ভারতের কাস্টমসঘাটস্থ অখন্ডমন্ডলী ভবন প্রাঙ্গণ।

মর্তলোক থেকে কৈলাসে দেবীকে বিদায় জানাতে নেচে-গেয়ে মাতোয়ারা হন ভক্তরা। তারা সেজেছিলেন উৎসবের বর্ণিল রঙে। কুশিয়ারা নদীর উভয়পাড়ে প্রতিমা বিসর্জনে এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা হয়। দীর্ঘদিন ধরে এমনভাবেই বাঙালি হিন্দুদের এ উৎসব ভারত ও বাংলাদেশের কুশিয়ারা নদীর দুই তীরে চলে আসছে।

পুজার্থীদের শুভেচ্ছা জানাতে আসেন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ জকিগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষ। প্রতিমা নিরঞ্জন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শহরের বিভিন্ন স্থানে ও কাস্টমসে পুলিশ, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল আর আনসার সদস্যরা ছিলেন সর্তক অবস্থায়। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষাবাহিনী স্পিডবোট নিয়ে টহলের সময়য় উভয়পাড়ের দর্শনার্থীদের প্রতি ছিল আন্তরিক।

কাস্টমসঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জন মঞ্চে উপজেলা পূজা পরিষদের সভাপতি সঞ্জয় চন্দ্র নাথের সভাপতিত্বে ও সাধারণ রাজস বিশ্বাসের সঞ্চালনায় ভক্ত অনুরাগী, দর্শনার্থী ও শুভার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য প্রদান করেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোস্তাক আহমদ, সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) শেখ মো. ফরিদ, জকিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন, জকিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আব্দুল আহাদ, জকিগঞ্জ থানার ওসি মোশারফ হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাকিম হায়দর, জকিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মামুন, প্রবাসী সংগঠক ফজলুর রহমান, শুভ্রকান্তি দাস চন্দনসহ রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।