সিলেটের গোয়াইনঘাটে এক বাড়িতে তাণ্ডব চালিয়ে পরিবারের সবাইকে কোপানোর নৃশংস ঘটনায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (১৭ জুলাই) সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন উপজেলার সদর ইউনিয়নের লাবু গ্রামের হাসিনা বেগম। এর আগে গত শুক্রবার খুন হন তার ছেলে আবদুল কাদির।
মামলার খরচ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে নারকীয় এ হত্যাকাণ্ডে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। তবে পরিবারের অন্য সদস্যরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি থাকায় এখনও মামলা হয়নি।
চার বছর আগের একটি হত্যা মামলায় আসামি করা হয় আবদুল কাদির, তার বাবা আবদুল খালিক ছাড়াও একই গ্রামের আতাফুল, শামসুদ্দিন, লুৎফুরসহ কয়েকজনকে। এ মামলার খরচ চালানো হতো সম্মিলিতভাবে, এর সমন্বয় করতেন আবদুল কাদির ও তার বাবা।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় এ নিয়ে তাদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা হয় অন্য আসামিদের। পরে রাতে হঠাৎ করে স্থানীয় আতাফুল, শামসুদ্দিন, লুৎফুর, কনা মিয়া, মফিজ উদ্দিন, আবদুর রহিম ও আপ্তাবুলের নেতৃত্বে গ্রামের শতাধিক লোক আবদুল কাদিরের বাড়ি ঘেরাও করে। ভয়ে পরিবারে সবাই ঘরে লুকালে সেই ঘরের চারদিকে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।
এসময় জানালা দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করলে আবদুল কাদিরকে ধরে তার গলা কাটা হয় এবং এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। এ দৃশ্য দেখে বাড়ির অন্যরা এগিয়ে এলে তাদেরও কোপায় হামলাকারীরা। এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে সেদিনই আবদুল কাদিরের মৃত্যু হয়।
গুরুতর জখম হয়ে কাদিরের বাবা আবদুল খালিক, মা হাসিনা বেগম, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সাবিনা বেগম ও বোন নাজমা বেগম এবং চাচাতো ভাই শহীদ আহমদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। রোববার হাসিনা বেগম মারা যান। অন্যদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম নজরুল ইসলাম বলেন, ওই বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার পরই পুরো গ্রাম প্রায় পুরুষশূন্য হয়ে গেছে। অন্য অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি ও মিডিয়া) মো. লুৎফর রহমান বলেন, প্রতিপক্ষের হামলায় ছেলের পর মায়েরও মৃত্যু হয়েছে। রোববার বিকেলে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ঘটনার সাথে জড়িত ১৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় এখনও মামলা দায়ের করা হয়নি।