হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে ফাঁসাতে আত্মগোপনে থাকা আব্দুল ছত্তার ওরফে মাসুক (২৮) কে উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
হবিগঞ্জ জেলা পিবিআই পুলিশ সুপার আল মামুন শিকদারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই(নি.) আবুল কাশেমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম বিশেষ অভিযান চালিয়ে রোববার দিবাগত রাত ১টায় কথিত অপহৃত আব্দুল ছাত্তারকে নরসিংদী জেলার মাধবদী থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করেন।
তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পিবিআই জানায়, প্রায় দেড় বছর পূর্বে আসামি সুলতানা বেগমকে বিয়ের প্রায় ১৫ দিনের মাথায় মা আয়েশা খাতুনের সাথে টাকা-পয়সা নিয়ে আব্দুল ছত্তারের ঝামেলা হয়। সেই সূত্র ধরে মায়ের সাথে রাগ করে ছত্তার তার বউকে নিয়ে চুনারুঘাট উপজেলার বড়কুটা গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে চলে যায়। সেখানে সংসার চালাতে ছত্তার আরএফএল কোম্পানী, ওলিপুরে স্বল্প বেতনের একটি চাকরি নেয়। শ্বশুর বাড়িতে আসার পরে পারিবারিক বিভিন্ন ছোট খাটো বিষয়াধি নিয়ে কলহের জের ধরে স্ত্রীর সাথে ছত্তারের দাম্পত্য সম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে। এর একপর্যায়ে স্ত্রী সুলতানা বেগম ভরণপোষণ ও দেনমোহরের টাকা চেয়ে তার বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। উপায়ান্তর না পেয়ে ছত্তার তার স্ত্রীর দায়ের করা মামলা থেকে বাঁচার জন্য তার মায়ের পরামর্শে শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করে প্রায় ৮ মাস পূর্বে স্বেচ্ছায় নরসিংদী জেলার মাধবদী থানা এলাকায় আত্মগোপনে চলে যায়। পরবর্তীতে সে তার মাকে দিয়ে শ্বশুর বাড়ির লোকজনদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করায়।
পিবিআই জানায়, আব্দুল ছত্তারের মা আয়েশা খাতুন ছেলের সন্ধান পেতে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, আমলী আদালত-২, হবিগঞ্জে আব্দুল ছত্তারের স্ত্রী ও শ্বশুরসহ ৫ জনকে আসামি করে পেনাল কোডের ৩৬৪/৩৪ ধারায় সিআর পিটিশন মামলা নং- ২৮/২৩ (চুনারুঘাট) দায়ের করেন।
বিজ্ঞ আদালত মামলাটির তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পিবিআই, হবিগঞ্জ জেলাকে নির্দেশ করলে মামলাটির তদন্তভার পিবিআই, হবিগঞ্জে কর্মরত এস আই (নি.) আবুল কাশেমের উপর ন্যস্ত করা হয়। পরে পুলিশের তদন্তে ঘটনার রহস্য বের হয়ে আসে।
এদিকে সোমবার (৮ মে ২০২৩) ভিকটিম আব্দুল ছত্তারকে উদ্ধারপূর্বক বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপন করা হলে সে নিজ ইচ্ছায় আত্মগোপনে ছিলো মর্মে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।