গত ১৩ আগস্ট থেকে মৌলভীবাজার, সিলেট ও হবিগঞ্জসহ সারাদেশের চা-বাগানগুলোতে একযোগে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করছেন চা শ্রমিকরা। দৈনিক ন্যূনতম মজুরি ৩০০ টাকা নির্ধারণ করার দাবিতে নিয়মিত আন্দোলন করছেন তারা।
চা শ্রমিকদের চলমান এই আন্দোলনে পূর্ণ সংহতি জানিয়েছে চায়ের রাজধানী খ্যাত শ্রীমঙ্গলের সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন উদ্দীপ্ত তারুণ্য।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) উদ্দীপ্ত তারুণ্য’র প্রধান সমন্বয়ক হৃদয় দাশ শুভ এবং মুখপাত্র শিমুল তরফদার এক যৌথ বিবৃতিতে জানান, ‘বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। কিন্তু উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রায় এখনও পিছিয়ে রয়েছে আমাদের চা শ্রমিক জনগোষ্ঠী। সারাদেশে শ্রমজীবী, পেশাজীবি মানুষের আয় বেড়েছে। কিন্তু বিগত কয়েক দশকেও ন্যূনতম কোনো মজুরি বৃদ্ধি হয়নি চা শ্রমিকদের। দৈনিক ১২০ টাকা মজুরিতে অমানুষিক পরিশ্রম করতে হয় চা শ্রমিকদের। বিশ্ববাজার এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই জীবনযাপনকে মানবেতর বলা চলে। চা শ্রমিক ইউনিয়নের দীর্ঘদিনের দাবি-দাওয়া ও ১৯ মাস আলোচনার পর মালিকপক্ষ মাত্র ১৪ টাকা মজুরি বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে। গতকাল পর্যন্ত চা শ্রমিকদের সাথে শ্রম অধিদপ্তর এবং মালিকপক্ষের দুই দফা আলোচনার পরও কোনো সমাধান আসেনি। বাগান মালিকেরা মজুরি বৃদ্ধি করতে নারাজ। ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের সকল স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাপারে চা শ্রমিকদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে তারা কখনোই তাদের প্রাপ্য অধিকার পাননি। এমতাবস্থায় চা অধ্যুষিত শ্রীমঙ্গলের তরুণদের সামাজিক সংগঠন হিসেবে উদ্দীপ্ত তারুণ্য চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির এই ন্যায়সঙ্গত দাবির পক্ষে দাঁড়ানোর সামাজিক দায় অনুভব করছে এবং চলমান এই আন্দোলনে পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করছে।