হবিগঞ্জের লাখাইয়ে ভূমিহীন, গৃহহীন বিধবা ছালেকার সংসার চলে ভিক্ষাবৃত্তিতে। জোটেনি কোনো ভাতার কার্ড। উপজেলার সিংহগ্রামের মৃত মকবুল হোসেনে স্ত্রী ছালেকা খাতুন স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে ভিক্ষাবৃত্তি করে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছেন।
স্থানীয় লোকজন ও বিধবা ছালেকা খাতুনের সাথে আলাপকালে জানা যায়, ছালেকার স্বামী মকবুল হোসেনের নিজের বাড়িতে যৎসামান্য জমি-জমা চাষ ও স্বামীর আয়-রোজগারে কোনোমতে সংসার চলছিল। তার রয়েছে ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে। যথাসময়ে ছেলে-মেয়েদের বিয়েও দেন। বিয়ের পর ছেলেরা তাদের ছেড়ে চলে যায় যে যার মতো।
এদিকে বৃদ্ধ স্বামীর আয়-রোজগার না থাকায় শেষ বয়সে এসে জীবন নির্বাহ করতে ভিটেমাটিটুকু বিক্রি করতে হয়। তারা হয়ে পড়েন ভূমিহীন। এরই মধ্যে বছর দশেক পূর্বে স্বামী মকবুল হোসেন মারা যান। এতে সালেকা পড়েন মহাবিপদে। নিরুপায় হয়ে আশ্রায় নেন একই গ্রামের তাউস মিয়ার বাড়িতে।
বর্তমানে ষাটোর্ধ্ব ছালেকা অন্যের বাড়িতে থেকে ভিক্ষা করে যা পান, তা দিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছেন।
ছালেকা বলেন, আমি শুনেছি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার গরিব অসহায় ভূমিহীনদের ঘর দিচ্ছে। আমি সরকারের কাছে একটি ঘর চাই, যাতে মরার সময় অন্তত নিজের ঘরে মরতে পারি। যেখানেই ঘর দেওয়া হোক না কেন আমি যেতে চাই। মাথা গোঁজার ঠাই চাই।
এ পর্যন্ত কোনো প্রকার ভাতা বা সহায়তার কার্ড পেয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি গরিব, আমাকে কে কার্ড দেবে? ভোট এলে অনেকে আশ্বাস দেয়, পরে আর খোঁজ রাখে না কেউ। তাই এ নিয়ে আর ভাবি না। যতদিন শরীর চলে এভাবেই চলতে চাই।
ছেলেরা খোঁজ নেয় কি না জানতে চাইলে ছালেকা বলেন, তারা তো আমার মতোই বউ-বাচ্চা নিয়ে কোনোমতে চলছে। কে কোথায় থাকে তাও জানি না। বাড়ি-ঘর থাকলে হয়তো তারা আসতো।
এ ব্যাপারে আলাপ করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দীন বলেন, নতুন করে বরাদ্দ পাওয়া গেলে ছালেকা খাতুনকে একটি ঘর দেওয়ার চেষ্টা করব।