গ্রীষ্মের কোন ফলে কী পুষ্টি

এই জ্যৈষ্ঠ মাসে বাহারি জাতের আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, তরমুজসহ নানা ধরনের সুস্বাদু ফলের সমাহার থাকে। ফলগুলো যেমন মিষ্টি, তেমন পুষ্টিকর। ভরপুর সব ধরনের ভিটামিন আর খনিজে।

আম

  • ফলের রাজা আম কোলন এবং স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
  • আম আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন সি, ইত্যাদির ভালো উৎস।
  • আমে থাকা পটাশিয়াম হদ্‌যন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে।

কাঁঠাল

  • জাতীয় ফল কাঁঠালে শর্করা ২০ থেকে ২৪ শতাংশ। প্রোটিন ও ফ্যাট খুবই কম। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে ও হদ্‌যন্ত্র ভালো রাখে।
  • ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
  • ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন চোখ ভালো রাখে।
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেম শক্তিশালী করে।
  • রক্তাল্পতায় রোগীদের জন্য কাঁঠাল খুবই উপকারী।
  • ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত করে।
  • বাচ্চাদের শারীরিক গঠনে কাঁঠাল গুরুত্বপূর্ণ।

লিচু

  • রক্তে শ্বেতকণিকার কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।
  • শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেম শক্তিশালী করে।
  • শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিহত করে।
  • কোষে অক্সিজেনের সরবরাহ বৃদ্ধি করে।
  • হাড়ের যত্নে সহায়ক।
  • ত্বকে ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাব থেকে রক্ষা করে।
  • ডায়াবেটিক রোগীদের জন্যও লিচু বেশ উপকারী।

তরমুজ

  • তরমুজের ৯২ শতাংশই পানি। শরীরে পানি ও তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষা করে।
  • মস্তিষ্ক সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  • কোলিন নামের উপাদান সবার জন্য উপকারী। এর অভাব নন-অ্যালকোহলযুক্ত ফ্যাটি লিভারের রোগ ও পেশির ক্ষতির কারণ।
  • তরমুজ নিয়মিত খেলে প্রোস্টেট, কোলন, ফুসফুস ও ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি কমে।
  • ক্যারোটিনয়েড দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে।
  • সিট্রুলিন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
  • টেস্টোস্টেরন হরমোনের বৃদ্ধি ঘটাতে খুব কার্যকর। তাই সুখী দাম্পত্য জীবনে তরমুজের প্রভাব আছে।

সতর্কতা

  • ডায়াবেটিক রোগীরা পুষ্টিবিদের পরামর্শে আম–কাঁঠাল খাবেন। পরিমাণে বেশি খেলে শর্করা বেড়ে যাবে।
  • বাচ্চাদের খালি পেটে লিচু খেলে মৃত্যুঝুঁকি আছে।
  • সুস্থ পূর্ণবয়স্ক মানুষের দিনে ৩০০-৪০০ গ্রামের বেশি ফল খাওয়া উচিত নয়।
  • প্রধান খাবারের পরপরই ফল খাওয়া উচিত নয়।
  • বিকেলের পর আর কোনো ফল নয়।

লেখা: মো. ইকবাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল