ইমেরিটাস অধ্যাপক ও বিশিষ্ট সাহিত্য সমালোচক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, ‘গ্রন্থাগারগুলোকে সাংস্কৃতিক চর্চার উৎকর্ষ কেন্দ্রে পরিণত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সংস্কৃতি চর্চায় বইয়ের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আগে প্রায় প্রতিটি এলাকায় লাইব্রেরি ছিল। সময়ের সাথে সাথে সেগুলো এখন বিলুপ্তপ্রায়। সংস্কৃতি চর্চার উৎকর্ষ কেন্দ্রে পরিণত করতে হলে লাইব্রেরিগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে।’
আজ (২ নভেম্বর) রাজধানীর বাংলা একাডেমিতে ঐতিহ্য প্রকাশনা আয়োজিত ‘ঐতিহ্য বই উৎসব’ শীর্ষক এক বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট এই ইতিহাসবিদ এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক চৌধুরী বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে বর্তমানে মানুষ বই পড়তে আগ্রহী নয়। যাদের হাতে ক্ষমতা আছে, তারা মারণাস্ত্র বানিয়ে পাখির মতো মানুষ হত্যা করতে ব্যস্ত। কিন্তু শুধু জ্ঞান অর্জনের জন্য নয়, আত্ম-উপলব্ধির জন্য এমনকি সুস্থ থাকার জন্যই বই পড়তে হবে এবং অন্যকে বই পড়তে উৎসাহিত করতে হবে।’
পুঁজিবাদী ব্যবস্থা দিন দিন মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে মানবজাতির মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করছে উল্লেখ করে অধ্যাপক চৌধুরী আরও বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে উঠছে, তবে তা ক্ষুদ্র পরিসরে। দীর্ঘমেয়াদে মানবতার জয় হবে, এটাই আমাদের বিশ্বাস ও আশার উৎস।’ তিনি বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পুঁজিবাদ ফ্যাসিবাদী শাসনের পৃষ্ঠপোষকতা করছে এবং এ কারণে পুঁজিবাদ তার চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।’ তবে খুব শিগগিরই পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে সমাজতন্ত্রের যুগের সূচনা হবে এবং সম্পত্তির উপর যৌথ মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হবে বলে বিশিষ্ট এই শিক্ষাবিদ আশা প্রকাশ করেন।
উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এই বিশিষ্ট কলামিস্ট বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও জাতীয় ঐক্য না থাকায় ইতিহাস বিকৃতির ঘটনা ঘটেছে।
এ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন লেখক শারমিন আহমেদ, তরুণ অনুবাদক মাহিন হক ও ঐতিহ্যের প্রকাশক আরিফুর রহমান নাঈম।