সিলেটের গোলাপগঞ্জে মামলা-হামলা দিয়ে এক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর পরিবারকে হয়রানি ও ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার (৩ আগস্ট) দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাঘা পরগনাবাজার এলাকাধীন দক্ষিণ কান্দিগাঁও গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সেনাবাহিনীর সাবেক নায়েক উস্তার আলী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উস্তার আলী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে ১৯৭১ সালে জীবন বাজি রেখে মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এই দেশকে স্বাধীন করেছেন। এই জানবাজ মুক্তিযোদ্ধাদের একজন আমি উস্তার আলী, যার মুক্তিযোদ্ধা নম্বর-০১৯১০০০৭৫৯৩। যা লাল মুক্তিবার্তা, ভারতীয় তালিকা, সেনাবাহিনীর গেজেট ও বেসামরিক গেজেট দ্বারা স্বীকৃত।
উস্তার আলী দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের সহযোগিতায় তাঁর তিন ভাতিজার হাতে তাঁর পরিবার নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়ে আসছেন। তারা হলেন- তাঁর সৎ ভাই মৃত আছাব আলীর পুত্র নুরুল আমিন, মৃত উসমান আলীর পুত্র আব্দুর রব ও আব্দুল আলিম। এছাড়া তাদের সঙ্গে আছেন গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাঘা পরগনাবাজার এলাকাধীন কান্দিগাঁও গ্রামের ‘ভূমিখেকো’ চক্রের সদস্য মৃত মখলিছ আলীর পুত্র আব্দুল হান্নান, মৃত জিলা মিয়ার পুত্র বাছির আলী। এরা সবাই সংঘবদ্ধ ‘ভূমিদস্যু’ চক্রের লোক ও এলাকায় প্রভাবশালী। তারা তাঁর স্বত্ত্ব-দখলীয় ভূমি জবরদখল ও আত্মসাতের হীন উদ্দেশে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে একের পর এক ষড়যন্ত্রমূলক সাজানো মামলা ও হামলার মাধ্যমে হয়রানি এবং আর্থিক, সামাজিক ও মানসিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত করে চলেছে।
মুক্তিযোদ্ধা উস্তার আলী নিজে ও তাঁর স্ত্রী সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার গোলাপনগর মৌজায় ১০৬ শতক ভূমির মালিক স্বত্ববান ও দখলকার দাবি করে বলেন, আমি তামাদি মুদ্দত থেকে এই ভূমি ভোগদখল, ভোগশাসন ও ভোগব্যবহার করে আসছি। আমার ভাতিজা ভূমিদস্যু নুরুল আমিন ও তার সহযোগী একটি সংঘবদ্ধ চক্র আমার স্বত্ত্বদখলীয় এই ভূমি জবরদখল ও আত্মসাৎ করতে মেতে ওঠেছে। ভূমি জোরপূর্বক দখলে নিতে ব্যর্থ হয়ে তারা আমার বিরুদ্ধে হামলা ও ষড়যন্ত্রমূলক সাজানো মামলার আশ্রয় নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে নুরুল আমিন চক্র আমাদের বিরুদ্ধে একের পর এক প্রায় অর্ধডজন ষড়যন্ত্রমূলক সাজানো মামলা দিয়েছে। মামলাগুলো হচ্ছে, গোলাপগঞ্জ সিআর মামলা নং-০১/২০১৪, গোলাপগঞ্জ থানার মামলা নং ১১(১)১৫, ফৌজদারী মোশন মামলা নং-৯২/২০১৭, ফৌজদারী রিভিশন মামলা নং-৯৫/২০১৮,গোলাপগঞ্জ মডেল থানার মামলা নং-১৫(১১)২০২০, গোলাপগঞ্জ নির্বাহী মামলা নং ৯৭/২০২০ ও সিলেটের সিনিয়র সহকারী জজ (গোলাপগঞ্জ) আদালতের স্বত্ত্ব মোকদ্দমা নং ৩৭/২০২০।
উস্তার আলী জানান, তদন্তে ও বিচারে তাদের এসব মামলা ও মোকদ্দমা ষড়যন্ত্রমূলক ও মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এ পর্যন্ত চারটি মামলার রায় তাঁর পক্ষেই হয়েছে। কিন্তু মামলাগুলো পরিচালনা করতে গিয়ে তিনি শারীরিক, মানসিক ও আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, নুরুল আমিন ও তার সহযোগীরা গত বছরের ৩০ নভেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধা উস্তার আলী, তাঁর স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েদের হত্যার উদ্দেশে ধাওয়া করে এবং এ ঘটনায় তিনি ১ ডিসেম্বর গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর-১৫) করেছেন।
এ অবস্থায় উস্তার আলী তাঁর পরিবারের জান-মালের নিরাপত্তা বিধানে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের বর্তমান সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।