সিলেটের গোলাপগঞ্জে সরকারি খাস জমি বা ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির মাটি কাটা কোন ভাবেই থামানো যাচ্ছে না। দিন দিন সক্রিয় হয়ে উঠছে ভূমিখেকোরা। দিনরাতের বালাই নেই, ভূমিখেকোরা কাটছে জমির মাটি। এতে জমি উর্বরতা হারাচ্ছে। ফসল চাষে অনুপযোগী হয়ে পড়ছে এসব জমি।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) উপজেলার বাঘা ইউনিয়নের তুরুকভাগ এলাকার হাতিমনগর মৌজায় গিয়ে দেখা ফসলি জমির মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। দিনের বেলা হওয়ায় বন্ধ থাকতে দেখা যায় কয়েকটি এক্সেভেটর। রাত হলেই শুরু হয় ফসলি জমির মাটি কাটার মহোৎসব।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এখানে মাটি কাটতে সক্রিয় তারেক ও জুনায়েদ নামে দুইজন। তারেক কুচাই ইউনিয়নের তৈয়ব কামাল এলাকার মৃত গোলাম কিবরিয়া শিকদারের ছেলে ও জুনায়েদ ৪নং খাদিমপাড়া ইউনিয়নের বালুটিকর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে। বেশ কিছুদিন ধরে তারা সরকারি খাস জমির মাটি কেটে বিক্রি করছেন বলে জানা যায়। দিনের বেলা এক্সেভেটর বন্ধ রাখেন ও রাতের বেলা শুরু করেন তারা মাটি কাটা। মাটি কেটে তারা বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে থাকেন। স্থানীয়রা এর প্রতিবাদ করলে তারা হুমকি ধমকি দিয়ে থাকেন বলে জানা যায়।
শুধু এই দুইজন নয়, আরও অনেকেই রয়েছেন মাটি কাটার সাথে জড়িত। এরা সমাজে ভূমিখেকো নামে পরিচিতি পেয়েছেন।
দ্রুত এদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি স্থানীয়দের।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি অভিজিৎ চৌধুরীর মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, ‘যারা সরকারি খাস জমির মাটি কাটছে তাদেরকে চিহ্নিত করে তাদের একটি রিপোর্ট আমরা তৈরি করছি। এরপর রিপোর্টটি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করব, যাতে এদের বিরুদ্ধে শক্তভাবে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় চেষ্টা করছি এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার। একটি বিষয় হচ্ছে, বাঘা ইউনিয়ন উপজেলা থেকে অনেকটা দূরে হওয়ায় আমরা খবর পেয়ে সেখানে যেতে যেতে তারা পালিয়ে যায়। এটাই হচ্ছে বড় সমস্যা।’
মানুষ না পেলে এক্সেভেটর জব্দ করা যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা অবশ্যই করা যায়। এর আগেও আমরা এক্সেভেটর জব্দ করেছি। গত সপ্তাহেও রাত ৩টার দিকে খবর পেয়ে তহশিলদারকে পাঠাই। সেখানে গিয়ে দেখা যায় কেউ নেই। খবর পেয়ে তারা পালিয়ে গেছে। তাদের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় অভিযান পরিচালনা করছি, আর এটা অব্যহত থাকবে।’